ঠাকুরগাঁওয়ে শিশু নির্যাতন, বাবা-সৎমায়ের ৩ বছর কারাদণ্ড
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ১২ বছর বয়সী ছেলেকে গোয়ালঘরের ভেতরে বাঁশের খুঁটিতে হাত-পা বেঁধে ৪ দিন ধরে মাটিতে ফেলে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে বাবা এবং সৎমাকে ৩ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঠাকুরগাঁও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমান এ দণ্ডাদেশ প্রদান করেন। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আবু সায়েম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আইনজীবী আবু সায়েম জানান, পীরগঞ্জ উপজেলার সেনগাঁও ইউনিয়নের সিন্দুর্না গ্রামের আব্দুল খালেকের প্রথম স্ত্রী সাহেরা খাতুন ছেলে সাহাবুদ্দিনকে রেখে প্রায় আট বছর আগে মারা যান।
এর পর থেকেই বাবা আব্দুল খালেক ও সৎমা আমিনা খাতুনের সংসারে বড় হতে থাকে সাহাবুদ্দিন। তখন থেকেই সৎমা ও বাবা মিলে নানা অজুহাতে সাহাবুদ্দিনকে প্রায়ই মারধর করতেন। ঠিকমতো খাবার দিতেন না। অমানবিক নির্যাতন করতেন।কয়েক দিন ধরে সাহাবুদ্দিনের কোনো খোঁজ না পেয়ে তার মামাতো ভাই আনোয়ার হোসেন গত ১৬ এপ্রিল তার ফুফা আব্দুল খালেকের বাড়িতে যান। বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান, গোয়ালঘরের ভেতরে একটি বাঁশের খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে সাহাবুদ্দিনকে মাটিতে ফেলে রাখা হয়েছে। এ সময় ওই শিশু তাকে জানায়, চার দিন ধরে তাকে এভাবেই হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখা হয়েছে। কোনো কিছু খেতে দেওয়া হয়নি।
ক্ষুধার জ্বালায় শিশুটি মাটি খেয়েছে। এ অবস্থায় আশপাশের লোকজনের সহায়তায় সাহাবুদ্দিনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করান এবং থানায় এজাহার দায়ের করেন আনোয়ার।এ ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ প্রশাসন। তারা বিষয়টির খোঁজখবর নেয়।
অভিযান চালিয়ে পিতা আব্দুল খালেক ও সৎমা আমিনাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। পরে আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে থানা পুলিশ। ঠাকুরগাঁও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সোমবার আদালতের বিচারক আরিফুর রহমান পিতা খালেক ও সৎমা আমিনাকে তিন বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করেন। তবে সৎমা আমিনার ছোট বাচ্চা থাকায় তাকে জেলখানার বাইরে থেকে সমাজসেবা কর্মকর্তার (প্রভেশন অফিসার) কাছে তিন মাস অন্তর হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই আব্দুল খালেক ঠাকুরগাঁও জেলখানায় আটক আছেন।আমাদের ফেইসবুক লিংক : ট্রাস্ট নিউজ ২৪