মোঃ নুর ইসলাম,দিনাজপুর ॥ দিনাজপুর ধর্মপ্রদেশের অন্তর্গত সুইহারী মিশনের আওতায় অসহায় সাধারন খ্রীষ্টভক্তরা প্রায় ১২ বছর যাবৎ কবরস্থান সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান না পাওয়ায় ভুক্তভোগী গ্রামবাসী মিশনের অব্যবহৃত জায়গায় ২২ জুলাই’২০২২ শুক্রবার বিকেলে নিজেদের জন্য কবরস্থান নিজেরাই নির্ধারন করেছে। মিশনের নিজস্ব কবরস্থান না থাকায় সম্প্রতি ৪ ব্যক্তির মৃতদেহ সুইহারী মিশনের অধীনে সমাহিত করতে না পারায় পরিবারের লোকজন এবং প্রতিবেশীরা চরম মনোকষ্টে এই কাজটি করেছে।
উল্লেখ্য, ক্যাথলিক মন্ডলীর নিয়মানুযায়ী প্রতিটি মিশনের একটি কবরস্থান থাকার কথা। সুইহারী মিশনের আওতাধীন কতিপয় গ্রামে কবরস্থান থাকলেও দুর্ভাগ্যবশতঃ তারা অন্য গ্রামের মৃতদেহ কবরস্থ করার ক্ষেত্রে দৃঢ়ভাবে বাধা দেন। এমনকি কবর খোড়ার পরেও মৃতদেহ কবরস্থ করতে দেওয়া হয় নাই। যারফলে, কবরস্থানবিহীন উত্তর গোসাইপুর ও নয়নপুর গ্রামের মৃতদেহ কবরস্থ করা নিয়ে গ্রামবাসীরা চরম অনিশ্চয়তা ও উদ্বীগ্নতায় রয়েছে। দিনাজপুর ক্যাথলিক ধর্মপ্রদেশের বিশপ সেবাস্টিয়ান টুডু সাময়িক সমাধান হিসাবে ২টি মৃতদেহ দিনাজপুর ক্যাথেড্রাল মিশনের কবরস্থানে সমাহিত করতে অনুমতি দিলেও তা নিয়ে ভুক্তভোগীদের চরম অসন্তুষ্টি ও ক্ষোভ রয়েছে।
সম্প্রতি বিশপ মহোদয়ের অনুমোদিত কমিটি অন্য মিশনের প্রতিটি মৃতদেহ ক্যাথেড্রাল মিশনের কবরস্থানে তার নিজস্ব লোক দিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে কবর খোড়াবাবদ ৫,০০০/- ও সমাধি দেওয়ার জন্য ১০,০০০/-টাকা ধার্য করেছে, যা গত ১৭ জুলাই সুইহারী মিশনের গীর্জায় ঘোষনা দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য যে, অন্য মিশনের নিজস্ব কবরস্থান থাকলেও সুইহারী মিশনের কবরস্থান না থাকায় বিশেষতঃ মিশনের অন্তর্গত উত্তর গোসাইপুর ও নয়নপুর গ্রামের জন্য এ হার নির্ধারন করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। ভুক্তভোগী গ্রামবাসীরা এর তীব্র নিন্দা জানায়।
সুইহারী মিশনের গোসাইপুর ও নয়নপুর গ্রামে প্রায় ১৫০টি পরিবারের বসবাস। এছাড়াও, দিনাজপুর শহরে বিচ্ছিন্নভাবে বহু খ্রীস্টান পরিবার বসবাস করে। এসকল পরিবারের মৃতদেহ কবরস্থ করার সমস্যা সমাধানের জন্য ধর্মপ্রদেশের বিশপ মহোদয়ের সাথে বহুবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোন প্রকার সমাধান দেন নাই। সাধারন খ্রীষ্টভক্তরা এ বিষয় নিয়ে চরম উদ্বীগ্নতা ও হতাশার মধ্যে থাকলেও বিশপ মহোদয় একেবারেই নির্বিকার।
একটি মিশন গড়ে উঠে সাধারন খ্রীস্টভক্তদের নিয়ে। সুইহারী মিশনের আওতায় যথেষ্ট পরিমান জমি অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। বিশপ মহোদয় উক্ত অব্যবহৃত জমি পশুপালন ও বেকারী ব্যবসার জন্য ভাড়া প্রদান করেছেন। অথচ, তাঁর খ্রীষ্টভক্তদের কবরের জন্য জায়গার কোন ব্যবস্থা করেন নাই। এমতাবস্থায় নিরূপায় হয়ে তারা নিজেদের শেষ ঠিকানা “কবরস্থান” নিজেরাই নির্ধারণ করে নিয়েছে।
নিজেদের শেষ ঠিকানা “কবরস্থান” বাস্তবায়নে কেউ বাধা দিলে ভুক্তভোগী জনগন এর তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে। এ বিষয়টি নিয়ে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।