রাজধানীর কদমতলীতে মা, বাবা ও বোনকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন প্রধান সন্দেহভাজন মেহজাবিন ইসলাম। তিনি বলেছেন, ক্ষোভ থেকে বাবা মাসুদ রানা, মা মৌসুমী ইসলাম এবং বোন জান্নাতুল ইসলামকে খুন করেন। এই খুনে তিনি একাই জড়িত।
মেহজাবিন বলেন, তিনজনকেই ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে প্রথমে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করে তিনি ৯৯৯-এ খবর দেন। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
আদালত সূত্র জানায়, চার দিনের রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার মেহজাবিনকে আদালতে হাজির করে জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কদমতলী থানার পরিদর্শক (অপারেশন) জাকির হোসাইন। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিন আরা জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
১৯ জুন কদমতলীর লাল মিয়া সরকার রোডের একটি বাসা থেকে পুলিশ তিনজনের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে। মেহজাবিনের স্বামী শফিকুল ইসলাম এবং তাঁদের পাঁচ বছর বয়সী মেয়েকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। তাঁদেরও ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই দিনই মেহজাবিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০ জুন ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এদিকে ২১ জুন তাঁর স্বামী শফিকুল ইসলামের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, মেহজাবিন খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁর ভাষ্য, কিছু বিষয় নিয়ে শিশুকাল থেকেই মায়ের প্রতি ক্ষোভ ছিল। পারিবারিক সম্পর্ক নিয়ে তিনি হতাশ ছিলেন। মধ্যপ্রাচ্যে থাকা অবস্থায় তাঁর বাবা আবার বিয়ে করেন। সেখানে তাঁর দুই ছেলেসন্তান রয়েছে। এ নিয়ে বাবার প্রতি তাঁর ক্ষোভ ছিল। তিন মাস আগে তাঁর বাবা দেশে ফেরেন। ছোট বোনের প্রতিও মেহজাবিনের ক্ষোভ ছিল। এসব কারণেই তিনি মা-বাবা ও বোনকে হত্যা করেন।
পুলিশ জানায়, মেহজাবিন তাঁর মা, বাবা ও বোনকে চায়ের সঙ্গে বেশি পরিমাণে ঘুমের ওষুধ প্রয়োগ করেছিলেন। স্বামী ও সন্তানকে কম ঘুমের ওষুধ প্রয়োগ করেন। তাঁদের হত্যার উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার মেহজাবিনের স্বামী শফিকুল ইসলাম হত্যার কথা স্বীকার করেননি।
আমাদের ফেইসবুক Link : ট্রাস্ট নিউজ ২৪