ঠাকুরগাঁওয়ে বালিয়াডাঙ্গীতে চিকিৎসা সেবার নামে প্রতারণা!
মোঃ মজিবর রহমান শেখ
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় কর্মসংস্থান তৈরির নামে মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে তিয়ানশি (এমএলএম) কোম্পানি ঔষধ বিক্রি করার মাধ্যমে গ্রামের বহু বেকার তরুণ-তরুণীদের সাথে প্রতারণা এবং টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় অফিস খুলে বসা গ্রামীণ সেবা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়েছে।
ছয় মাস হলো, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার থানা রোডে টিএন্ডটি অফিসের বিপরীতে “সম্প্রীতি ডিস্ট্রিবিউটর অফিস” খুলে বসেছিল চক্রটি। বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই, চিকিৎসা প্রদানের নামে অনুমোদনহীন বিদেশি কোম্পানির ঔষধ বিক্রি করছিল তারা। কর্মসংস্থানের নামে, ঔষধ বিক্রিতে ব্যবহার করা হচ্ছিল স্থানীয় বেকার তরুণ, তরুণী এবং গ্রামের মহিলাদের। খবর পেয়ে সাত অক্টোবর, সোমবার দুপুরে, অভিযান পরিচালনা করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ।
দীর্ঘ দুই ঘণ্টার অভিযানের পর, বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায়, প্রতিষ্ঠানটিকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বৈধ কাগজপত্র দাখিল না করা পর্যন্ত, কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও এ্যাসিল্যান্ড মোহাম্মদ আরাফাত হোসাইন। তিনি জানান, গ্রামীণ সেবা এন্টারপ্রাইজের লোকজন, বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ঔষধ বিক্রি ও চিকিৎসা পরামর্শ দিচ্ছিলেন, যা মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ এর ২২ ধারায় অপরাধ। এজন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং কাগজপত্র দেখাতে পারলে অফিসটি আবার খুলতে দেওয়া হবে।
অভিযানে থাকা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আহাদুজ্জামান সজিব বলেন, রেজিস্টার্ড চিকিৎসক ছাড়া ঔষধের পরামর্শ কেউ দিতে পারেন না। তাছাড়া, এখানে যেসব ঔষধ বিক্রি করছেন, সেগুলোর দেশের অনুমোদন নেই। তিয়ানশি বাংলাদেশ লিমিটেডের বালিয়াডাঙ্গী অফিসের ডিষ্ট্রিবিউটর নুরে আলম জানান, আমরা কাগজপত্র দেখিয়েছি, কিন্তু বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি। কোম্পানির আইনজীবী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান তিনি। তবে, ঔষধ নয়, তারা ফুড সাপ্লিমেন্ট বিক্রি করছেন বলেও দাবি করেন।
অভিযানের সময়, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ফরিদা ইয়াসমিন, সহকারী স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আব্দুল গফুর, এবং বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।