শ্রীপুরে লবলং নদী দখল ও দূষণ বন্ধে নদী পরিব্রাজক দলের মানববন্ধন
মো: রিপন মিয়া, গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরের শ্রীপুরে লবলং নদীর সব অংশ দখল ও দূষণ রোধে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল, শ্রীপুর উপজেলা শাখা।
শুক্রবার, বিশে সেপ্টেম্বর, সকাল সাড়ে দশটায় উপজেলার নয়নপুর মেডিকেল মোড় সড়কের লবলং নদীর আদুরবান ব্রিজ সংলগ্ন এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন গাজীপুর জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক এস এম আবুল কালাম আজাদ।
আবুল কালাম আজাদ তার বক্তব্যে বলেন, “নদী বাঁচলে কৃষক বাঁচবে, কারণ খরা মৌসুমে কৃষকরা এই নদী থেকেই সেচ দিয়ে ফসল উৎপাদন করে। আবার, ভরা মৌসুমে নদীর পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা হয়ে কৃষকের ফসল নষ্ট হয়। তাই আমি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের বলতে চাই, আপনারা আগে নদীকে বাঁচান, তাহলে আমাদের দেশ কৃষি ও শিল্প নিয়ে একটি সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত হবে।”
মানববন্ধনে নদী পরিব্রাজক দলের শ্রীপুর উপজেলা শাখার সভাপতি সাঈদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে, এবং সাধারণ সম্পাদক সফি কামালের সঞ্চালনায় বক্তারা বলেন, “লবনদহ নদী, যা এখন মরা খালে রূপান্তরিত হয়েছে, নদীর কোনো বৈশিষ্ট্য বহন করে না। কয়েক বছর ধরেই শ্রীপুর ও সদরের বিভিন্ন শিল্প-কারখানার বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে তুরাগেও দূষণ বেড়েছে, জলজ প্রাণি এবং মাছ নেই বললেই চলে। তাছাড়া সীমানা নির্ধারণের অভাবে নদীর ফোরশোর চলে যাচ্ছে শিল্পপতিদের দখলে। নদী দূষণ মুক্ত না হলে ভূগর্ভস্থ পানি দুষিত হবে, তাই যেভাবেই হোক, এই নদীকে বাঁচাতে হবে।”
গ্রামবাসীরা জানান, দখল ও দূষণে খালটি প্রায় মৃত। পঁচাশি কিলোমিটার দীর্ঘ লবলং নদীটি দখলদারদের কবলে পড়ে বর্তমানে খালে পরিণত হয়েছে। এটি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার খিরু নদীর সংযোগস্থল থেকে উৎপত্তি হয়ে গাজীপুরের তুরাগ নদীতে গিয়ে মিশেছে। এ খালকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে অসংখ্য কলকারখানা। এক সময় নদীটির দৈর্ঘ্য ছিল কোথাও পঁয়ত্রিশ ফুট, আবার কোথাও চল্লিশ ফুট। কিন্তু বিভিন্ন সময় শিল্প-কারখানার মালিকেরা কারখানা নির্মাণের সময় খালের জায়গা দখল করে নিয়েছে, পরিবর্তন এনেছে নদীর গতিপথেও। দখল ও দূষণে কোথাও কোথাও নদীটি আবিষ্কার করা কঠিন হয়ে পড়ছে। ফলে খালটি এখন মৃত প্রায়।”
গ্রামবাসীরা দাবি করেন, “এই নদী উদ্ধার করে সীমানা নির্ধারণ, দখলকৃত অংশ পুনরুদ্ধার, খালের পানিতে বর্জ্য নিষ্কাশন বন্ধ, জলজ প্রাণির ক্ষতি ও কৃষি কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি কারীদের প্রতিরোধ করতে হবে।”