যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়েছে টুইটার কর্তৃপক্ষ। ট্রাম্পের বক্তব্যে নতুন করে সহিংসতা ছড়াতে পারে বলেই টুইটার এমন ব্যবস্থা নিয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
টুইটার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কয়েক দিন ধরে ট্রাম্পের করা টুইটগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেই অ্যাকাউন্ট বন্ধের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।ফেসবুক আগেই ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে।
পদত্যাগ, অভিশংসন ও কর্ম–অক্ষম ঘোষণার চাপে থেকে আগামী দেড় সপ্তাহ কাটানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে ট্রাম্পের। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার অপেক্ষায় থাকা জো বাইডেন পরিস্থিতিকে আইনপ্রণেতাদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।
গত বুধবার মার্কিন আইনসভা ভবন বা ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প–সমর্থকদের ন্যক্কারজনক হামলার পর পাঁচজন মারা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এ হামলা নজিরবিহীন। এ হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রে তো বটেই, বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। মার্কিন আইনপ্রণেতাদের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্পের বিদ্বেষমূলক প্রচার বন্ধের আহ্বান জানান। এমনকি গত বৃহস্পতিবার সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা টুইট করে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট একেবারে বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানান।
এমন নানামুখী প্রতিবাদে এখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা কেউ আর শুনছে না। ক্ষমতার শেষ দিকে এসে ট্রাম্প অনেকটাই পাগলের মতো আচরণ করছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যাতে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করতে না পারেন, তা নিয়ে স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি নিরাপত্তাপ্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন। স্পিকার বলেছেন, অন্য সব বিকল্পও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী বলবৎ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দায়িত্ব পালনে অক্ষম ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। মাইক পেন্স এ নিয়ে তাঁর অবস্থানের কথা এখনো প্রকাশ্য করেননি।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, ইউএসএ টুডেসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে এখনই সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হচ্ছে। রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারাও ট্রাম্পকে ক্ষমতা ছাড়তে আহ্বান জানাচ্ছেন।
ট্রাম্প সসম্মানে পদত্যাগ না করলে তাঁকে অভিশংসন মোকাবিলা করতে হবে। কংগ্রেসে ভোটাভুটির জন্য অভিশংসন–প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হয়ে গেছে। আগামী সোমবারই এমন প্রস্তাব কংগ্রেসে উপস্থাপিত হতে পারে।
৬ জানুয়ারি রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে এমন পরিকল্পিত সহিংসতা হতে পারে, তা কেউ মেনে নিতে পারছে না। ঘটনার পরও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর এমন বেপরোয়া আচরণের জন্য কোনো দুঃখ প্রকাশ করেননি। তিনি লজ্জিতও হননি। উল্টো দম্ভের সঙ্গে বলেছেন, জো বাইডেনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি থাকবেন না।
পরিস্থিতি এমন নাজুক হওয়ার পরও ট্রাম্প বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানাননি। হামলায় পাঁচজন নিহত হওয়ার পরেও ট্রাম্প নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলছেন। তবে ট্রাম্পের এসব কথা আর কেউ শুনছে না। জো বাইডেন বলেছেন, তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিত না থাকাই ভালো।
স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও জো বাইডেনে সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিষয়ে কংগ্রেসের ওপর ছেড়ে দিয়ে নিজের ক্ষমতাগ্রহণের পর কী কী করবেন, তাতেই গুরুত্ব দিচ্ছেন জো বাইডেন। বাইডেন বলেছেন, কংগ্রেস ট্রাম্পের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেবে, তিনি তা–ই অনুসরণ করবেন। এ নিয়ে ধীরে চলার ওপরই প্রাধান্য দিচ্ছেন জো বাইডেন।
আমাদের ফেইসবুক Link : ট্রাস্ট নিউজ ২৪