বাংলাদেশকে আরো ছয় লাখ ডোজ কভিড টিকা উপহার দেবে চীন। দেশটির স্টেট কাউন্সেলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে টেলিফোন আলাপে এই কথা জানিয়েছেন।
ঢাকায় চীন দূতাবাস জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনের অনুরোধে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে ছয় লাখ ডোজ কভিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় চালান পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে গত ১২ জুন উপহারের প্রথম চালানে পাঁচ লাখ ডোজ টিকা পাঠিয়েছিল চীন।
দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশে কভিড পরিস্থিতির দিকে চীন নিবিড় দৃষ্টি রাখছে। কভিডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াইয়ের গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে বাংলাদেশি বন্ধুদের দ্রুত টিকা পাওয়া এবং বিদেশ থেকে সরবরাহে ঘাটতির বিপরীতে ব্যাপক অভ্যন্তরীণ চাহিদা সামাল দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে চীন অবগত। পাঁচ লাখ ডোজ কভিড টিকা পাঠানোর মাত্র ৯ দিনের মাথায় দ্বিতীয় চালানে আরো ছয় লাখ ডোজ টিকা পাঠানোর ঘোষণা বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতি চীনের গুরুত্বের প্রতিফলন।
চীন দূতাবাস জানায়, তারা বিশ্বাস করে যে চীনা উপহারের টিকার দ্বিতীয় চালান অবশ্যই বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে মহামারি মোকাবেলায় শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। ভবিষ্যতে মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই, সহযোগিতা জোরদার এবং জনগণের স্বাস্থ্য ও জীবনের কার্যকর সুরক্ষায় চীন বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে সহযোগিতা দিতে চায়।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, কভিডের টিকা সংগ্রহে বাংলাদেশ জোরালো কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন গত সপ্তাহে কভিডের টিকা চেয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করকে ফোন করেন। যুক্তরাষ্ট্র যেন বাংলাদেশকে টিকা দেয়, সে জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাতে তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। কানাডার কাছেও বাংলাদেশ টিকা চেয়েছে। এ ছাড়া চীন ও রাশিয়ার কাছ থেকে টিকা কেনার প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন টেলিফোনে আলাপকালে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের কভিড টিকার যৌথ উৎপাদনের অনুরোধ করেন। এ সময় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্র উল্লেখ করে বলেন, চীন বাংলাদেশে কভিড টিকার যৌথ উৎপাদনে সে দেশের কম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করবে। তিনি জানান, চীন বাংলাদেশ ছাড়াও মালয়েশিয়া, তুরস্ক, ব্রাজিল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে টিকার যৌথ উৎপাদনে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে চীনের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় (বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন) বৈঠক অনুষ্ঠানে শিগগির উদ্যোগ নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
আমাদের ফেইসবুক link : ট্রাস্ট নিউজ ২৪