ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভুলতা বাজারে সজীব গ্রুপের হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস কারখানা। মহাসড়কের সঙ্গে প্রবেশ গেট। গেট দিয়ে ঢুকতে চারটি ভবন ও দুটি পণ্য রাখার শেড। পিছনের ছয় তলা ভবনটি হলো জুস কারখানা। এই ভবনটিতে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
সেজান জুস কারখানার শ্রমিকরা জানান, দুই মাস আগে একই ভবনে আগুন লেগেছিল। তখন শ্রমিকরা নিজ উদ্যোগে আগুন নিভিয়ে ফেলে। কারখানায় চার মাসের ওভারটাইম ও দুই মাসের বেতন-ভাতার দাবিতে গত মাসে শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কারখানার প্রতিটি ফ্লোরে জুসসহ অন্যান্য ফুড সামগ্রী তৈরির জন্য বিপুল পরিমাণ কেমিক্যাল মজুত ছিল। অধিক দাহ্য পদার্থ থাকায় মুহূর্তের মধ্যে আগুন প্রতিটি ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে কোনো কোনো স্থানে রড গলে যায়। এছাড়া কারখানার কাঁচামাল, উত্পাদিত পণ্য, ঘি, বাটার, তেল, পলিব্যাগ, মবিলসহ দাহ্য পদার্থে আগুন স্থায়ী রূপ নেয়।
স্বজনরা শ্রমিকদের খুঁজতে এসেছেন। কারখানায় আগুন লাগার পর নিয়োজিত কর্মীরা চতুর্থ তলার কলাপসিবল গেট তালা বদ্ধ করে রাখে। ছোট আগুন ও সহজেই নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে এমন মন্তব্য করে শ্রমিকদের বের হতে দেওয়া হয়নি। ভবন থেকে বের হওয়ার বিকল্প সিঁড়ি কিংবা দরজা ছিল না। ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোডের অধিকাংশ শর্তই পালন করা হয়নি। ১৫ বছর আগে এই কারখানাটি স্থাপন করা হয়। কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের অধিকাংশই শিশু-কিশোর ছিল। তারা সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ।
আব্দুর রহিম নামে একজন শ্রমিক বলেন, কারখানায় বেশির ভাগ শ্রমিকের বয়স ১০ বছর থেকে ২০ বছরের মধ্যে। কর্তৃপক্ষ সস্তায় শিশুদের শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দিত। কারখানায় নেই কোনো শ্রমিক ইউনিয়ন। কারখানায় অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা কোনো ফ্লোরেই অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা দেখতে পাননি।
কোনো রকম পরিদর্শন ছাড়াই কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর কারখানাটিতে ছাড়পত্র দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ভবন পরিদর্শন শেষে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে কী কারণে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এখানে নথিপত্র ঠিক আছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা হবে।
আমাদের ফেইসবুক Link : ট্রাস্ট নিউজ ২৪