২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. আজিজুল হক রানা ওরফে শাহনেওয়াজ ওরফে রুমানকে (৪৪) ২১ বছর পর গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই দীর্ঘ সময়ে সে নিজের পরিচয় গোপন করে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েছে, এবং বিয়ে করে সংসারও করছে।
এখনও এই মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত চার জঙ্গি পলাতক রয়েছে। তারা হলো এনামুল, লোকমান, ইউসুস ও মোসায়েক।
পুলিশ জানায়, গতকাল ১ মার্চ রাজধানীর খিলক্ষেতের খিলক্ষেত বাজার মসজিদের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার আজিজুল হক দীর্ঘ ২১ বছর বিভিন্ন ছদ্মবেশে নানা পেশার আড়ালে নিজেকে আত্মগোপনে রাখেন। এভাবে তিনি অত্যন্ত গোপনে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কয়েকবার দেশ ত্যাগের পরিকল্পনাও করেছিলেন আজিজুল হক। তবে ব্যর্থ হয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ভিন্ন ভিন্ন নামে আত্মগোপনে ছিলেন। নিজেকে লুকিয়ে রাখতে কখনো টেইলারিং, কখনো মুদি দোকানি, বই বিক্রেতা, গাড়িচালক ছিলেন।
আসাদুজ্জামান জানান, ২০০০ সালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ তার সফরসঙ্গীদের হত্যার উদ্দেশ্যে কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান সরকারি আদর্শ কলেজ মাঠে সভামঞ্চের পাশে মাটির নিচে একটি ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখে আসামিরা। এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়। বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ১৪ জনের ফায়ারিং স্কোয়াডে গুলি করে হত্যার আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রদোহীর মামলায় প্রত্যেকের ২০ বছর করে সাজা হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ৫ জন পলাতক ছিল। তাদের মধ্যে মো. আজিজুল হক রানা ওরফে শাহনেওয়াজ ওরফে রুমানকে (৪৪) গ্রেফতার করলো সিটিটিসি। তবে এখনও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার জন পলাতক রয়েছে।
তিনি জানান, গ্রেফতার রানা মুফতি হান্নানের সঙ্গে বোমা পুঁতে রাখার দায়িত্বে ছিল সে। বোমাটি উদ্ধারের পর আজিজুল হক শাহনেওয়াজ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসে।
ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পালিয়ে ছিলেন দেশেই। তবুও তাকে গ্রেফতারে দীর্ঘ ২১ বছর কেন লাগল? গোয়েন্দা ব্যর্থতা রয়েছে কি না?- এমন প্রশ্নের উত্তরে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আজিজুল হক ঘন ঘন জায়গা পরিবর্তন করতেন। ২১ বছর লাগলেও এটি ব্যর্থতা নয়, সফলতা। মামলায় আরও ৪ জন – মো. ইউসুফ, মো. লোকমান, শেখ মো. এনামুল ও মো. মিজানুর রহমান পালিয়ে আছেন। তাদেরকেও আমরা গ্রেফতার করতে পারব বলে আশা করছি।’
আমাদের ফেইসবুক লিঙ্ক :