রাজকীয় মাউন্ট ফুজির উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে আওকিগাহারার ১৩.৫ বর্গমাইল বিস্তৃত একটি গভীর বনাঞ্চল। এই বনাঞ্চলকে ‘গাছের সাগর’ বলা হয়। এই গভীর বনাঞ্চলটি জাপানের ‘সুইসাইড ফরেস্ট’ নামেও পরিচিত।
জাপানিদের মধ্যে অনেকেই এই বনকে বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার জন্য। নিজের শেষ মুহূর্তের স্থান হিসেবে যারা এই স্থানটিকে বেছে নিয়েছেন তাদের অনেকেরই মৃতদেহের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে ধারনা করা হয় এই স্থানের বছরে প্রায় ১০০ জন মানুষ আত্মহত্যা করে।
পৃথিবীতে জাপানিদের মধ্যেই আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। মানসিক স্বাস্থ্য, পারিবারিক এবং অর্থনৈতিক সমস্যার কারনেই জাপানে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার হার লক্ষ্য করা যায়।
১৯৬০ সালে, জাপানি লেখক সেইচো মাতসুমোতো ট্র্যাজিক উপন্যাস ‘কুরোই জুকাই’ প্রকাশ করেন, যেখানে একজন ব্যর্থ প্রেমিকা তার জীবন শেষ করার জন্য ‘গাছের সাগরে’ আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। এই বইটি জাপানি সংস্কৃতিতে একটি মৌলিক এবং অশুভ প্রভাব ফেলেছিল ভেবে ধারনা করেন বিশেষজ্ঞরা।
কেননা ওই বনে যারা আত্মহত্যা করেছিলেন তাদের ফেলে যাওয়া পরিত্যাক্ত বস্তুর মধ্যে সেই বইটি কয়েকবারই পাওয়া গিয়েছিল। প্রাকৃতিকভাবে সুন্দর হওয়ায়, স্থানটি হাইকার এবং অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের কাছে খুবই পছন্দের। অনেকেই এখানে আসেন মাউন্ট ফুজির সৌন্দর্যের সাক্ষী হতে।
কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই এখানে এসে পথ হারিয়ে ফেলেন। তাই পথনির্দেশক মার্কার হিসাবে তাদের সাথে একটি প্লাস্টিকের টেপ রাখেন দর্শনার্থীরা। এবং প্লাস্টিকের ফিতা বা টেপ দিয়ে গাছগুলিকে চিহ্নিত করতে থাকে তারা, যাতে সহজেই ফিরে আসার পথ খুঁজে পাওয়া যায়।
আমাদের ফেইসবুক Link : ট্রাস্ট নিউজ ২৪