ঢাকাই ছবির নায়িকা পরীমনি গাজীপুরের কাশিমপুরের মহিলা কারাগারে রয়েছেন। আজ (মঙ্গলবার) আদালত থেকে জামিন পেলেও রাতে মুক্তি পাচ্ছেন না। কারাগার কর্তৃপক্ষ সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিট পর্যন্ত জামিননামার কপি হাতে পায়নি।
কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুন গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা এখনো পরীমনির জামিননামা পাইনি। সেজন্য তাকে লকআপে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে আজ আর তিনি মুক্তি পাবেন না। তার জামিননামা আমাদের কাছে এসে পৌঁছালে আগামীকাল (বুধবার) তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হবে।
এর আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনিকে জামিন দেন আদালত। দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ জামিনের আদেশ দেন।
এরপরে বিকালে পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান ও নীলাঞ্জনা রিফাত পরীমনির পক্ষে জামিননামা দাখিল করেন। সেই জামিনামায় বিচারকের স্বাক্ষরের পরে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আদালতের সেরেস্তাদার রাশেদ।
তিনি বলেন, বিকাল সাড়ে ৪টায় আদালত থেকে স্পেশাল বাহক দিয়ে জামিননামা পাঠানো হয়েছে। জামিননামা কেরানীগঞ্জের কারাগারে যাওয়ার পরে সেখান থেকে ফ্যাক্সের মাধ্যমে গাজীপুরের কাশিমপুরে মহিলা কারাগারে পাঠানো হবে। এরপরে তিনি মুক্তি পাবেন।
কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ গণমাধ্যমকে বলেন, বিকাল সাড়ে ৫টায় জামিননামা পাওয়ার পরে মেইলে আমরা গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছি। এখন সেখান থেকে পরীমনিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
গত ৪ অগাস্ট রাতে ঢাকার বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। পর দিন তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক আইনে এ মামলা করা হয়। জব্দ তালিকায় পরীমনির বাসা থেকে ‘মদ, আইস ও এলএসডির মতো মাদকদ্রব্য’ উদ্ধারের কথা বলা হয়।
ওই দিনই পরীমনিকে প্রথম দফায় চার দিন ও ১০ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় দুদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি।
সবশেষ গত ১৯ আগস্ট পরীমনির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তৃতীয় দফা রিমান্ড শেষে ২১ আগস্ট আদালতে হাজির করা হলে পরীমনিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
গত ২২ আগস্ট পরীমনির জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। ওই দিন আদালত শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।
পর দিন আরেক দফা আবেদনে ‘দ্রুত শুনানির’ আবেদন করেন পরীমনির আইনজীবী। এতে সাড়া না পেয়ে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। সেখানে রুল চাওয়ার পাশাপাশি পরীমনির জামিন আবেদনও করা হয়। হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৬ আগস্ট সরাসরি জামিন আদেশ না দিয়ে রুল জারি করেন।
আদেশের অনুলিপি পাওয়ার দুদিনের মধ্যে পরীমনির জামিন আবেদনের শুনানি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। সেই সঙ্গে ২২ আগস্ট পরীমনি জামিন অবেদন করার পর শুনানির জন্য ২১ দিন পরের তারিখ রেখে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত যে আদেশ দিয়েছে, সেটি কেন বাতিল করা হবে না, তাও জানতে চান হাইকোর্ট।
১ সেপ্টেম্বর রুল শুনানির তারিখ রেখে এই সময়ের মধ্যে মহানগর দায়রা জজ আদালতকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। আর হাইকোর্টের এ আদেশ বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিবাদীর কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে সরকারের আইন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয় সেদিন।
আমাদের ফেইসবুক Link : ট্রাস্ট নিউজ ২৪