নতুন করে আরও পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাজারে ডিমের সরবরাহ বৃদ্ধি ও বাজারদর স্থিতিশীল রাখতে আমদানি নীতি আদেশ-২০২১-২৪-এর শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে আজ রোববার নতুন করে এই পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এর আগে দুই দফায় ১০টি প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি করে মোট ১০ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে প্রথম দফায় চারটি প্রতিষ্ঠানকে চার কোটি এবং দ্বিতীয় দফায় ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে ছয় কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। আজ নতুন করে আরও পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১৫ প্রতিষ্ঠানকে ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। নতুন করে আমদানির অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠান পাঁচটি হলো ইউনিয়ন ভেঞ্চার লিমিটেড, জে এফ জে প্যারাডাইস কানেকশন, লায়েক এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স লাকি এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স পিংকি ট্রেডার্স। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে, এ পর্যন্ত ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও এখনো কোনো ডিম আমদানি হয়নি। আমদানির ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পরও আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে আমদানির অনুমতিপত্র বা আইপি নিতে হয়। ওই আইপির বিপরীতে আমদানির ঋণপত্র বা এলসি খুলে ব্যাংকগুলো। এত দিন আইপি জটিলতায় অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানির ঋণপত্র খুলতে পারছিল না। গত সপ্তাহের শেষে ১০ প্রতিষ্ঠানকে আইপি দিয়েছে আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়। তাই প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানির ঋণপত্র খুলতে শুরু করেছে। আমদানির অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই ভারত থেকে ডিম আমদানি হবে। তবে মোড়কজাত করে তা বাজারে ছাড়তে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে বলে জানান আমদানিকারকেরা।
প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ডিম আমদানির অনুমোদন পাওয়া একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভারত থেকে আমদানি করা ডিম দেশে এলে প্রতিটি ডিম বাজারে ১০ টাকায় বিক্রি হতে পারে।
এখন বাজারে প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে সাড়ে ১২ টাকায়। যদিও গত ১৪ সেপ্টেম্বর সরকার প্রতিটি ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বেঁধে দিয়েছে ১২ টাকা। ডিমের পাশাপাশি আলু ও পেঁয়াজের দামও বেঁধে দেওয়া হয়। সরকারের বেঁধে দেওয়া এ দাম কার্যকরে মাঠে নামে ভোক্তা অধিদপ্তরসহ স্থানীয় প্রশাসন। দেশের বিভিন্ন স্থানে চালানো হয় অভিযান, জরিমানাও করা হয়। তারপরও তিন পণ্যের বেঁধে দেওয়া দাম কার্যকর হয়নি বাজারে।
এমন পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে নতুন করে আরও ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর আগে প্রথম দফায় ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয় গত ১৮ সেপ্টেম্বর। ওই দিন চার প্রতিষ্ঠানকে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে মীম এন্টারপ্রাইজ, প্রাইম এনার্জি ইমপোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স, টাইগার ট্রেডিং ও অর্ণব ট্রেডিং লিমিটেড। আর দ্বিতীয় দফায় ছয় প্রতিষ্ঠানকে ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয় গত ২১ সেপ্টেম্বর। ওই দিন আমদানির অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে চিজ গ্যালারি, পপুলার ট্রেড সিন্ডিকেট, এমএস রিপা এন্টারপ্রাইজ, এসএম করপোরেশন, বিডিএস করপোরেশন ও মেসার্স জয়নুর ট্রেডার্স।
সাধারণত দেশে ডিম আমদানি নিষিদ্ধ। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মতিতে আমদানির অনুমতি দিতে পারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বর্তমান বাজার পরিস্থিতি তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চার শর্তে এখন পর্যন্ত ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে।
আমাদের ফেইসবুক লিংক : ট্রাস্ট নিউজ ২৪