চট্টগ্রামে ৫৫ লাখ টাকার মোবাইল ফোনের ১ হাজার সিমসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ও অবৈধ ব্যবসায় জড়িত্ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সাতকানিয়া উপজেলার মধ্যম কাঞ্চনা এলাতা থেকে মো. বদরুদ্দোজাকে (৩৬) বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেফারের পর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার ভোরে নগরীর বাকলিয়া থানার ময়দার মিল এলাকার কাশেম ম্যানসন নামে একটি ভবনের পাঁচ তলার একটি ফ্ল্যাটে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) কর্মকর্তাদের নিয়ে অভিযানে চালায় র্যাব।
পরে বিকালে সে অভিযানের বিষয়ে র্যাব জানায়, অভিযানে বাসাটি থেকে অত্যাধুনিক ৩ টি ভিওআইপি মেশিন, ৪টি ল্যাপটপ, ১ হাজার ৩৫০টি সিম, ৮টি রাউটার, ট্যাব, ৫ টি মডেমসহ বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। এসব সরঞ্জামের মূল্য ৫৫ হাজার টাকা।
র্যাব অধিনায়ক বলেন, “গ্রেপ্তার বদরুদ্দোজা মূলত তার ছোট ভাই নুরুল হুদা ওরফে রনিকে নিয়ে অবৈধ এ ব্যবসা পরিচালনা করত। ১৮ বছর তিনি সৌদিআরব ছিলেন। পরে করোনা মহামারির কারনে তিনি দেশে ফিরে আসেন।
“তার ছোট ভাই রনির এ সংক্রান্ত তথ্য প্রযুক্তির ধারণা ছিল। বদরুদ্দোজার আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং রনির টেকনিক্যাল নলেজের মাধ্যমে দেড় বছর আগে বাসা ভাড়া নিয়ে তারা এ ব্যবসা শুরু করে।”
ভবন মালিকের বরাত দিয়ে র্যাব কর্মকর্তা জানান, “তারা ৮ হাজার টাকায় বাড়িটি ভাড়া নেয়। ভাড়া নেওয়ার আগে তারা জানিয়েছিল পার্শ্ববর্তী স্থানে তারা একটি ভবন নির্মাণ করছেন।
“সেটির দেখভাল করার জন্য তাদের একটি বাসা প্রয়োজন। ভাড়া নিয়েই সেখানে অবৈধ ভিওআপি সরঞ্জাম স্থাপন করে।”
র্যাব কর্মকর্তা ইউসুফ জানান, বাসায় না থেকে তারা সেখানে চারটি সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করে। মোবাইল ফোন থেকে সরঞ্জামগুলোর দেখভাল করত এবং সপ্তাহ/১০দিন পরপর সেগুলো দেখতে যেত।
গ্রেপ্তারকৃত বদরুদ্দোজাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, জব্দ করা টেলিটক সিমগুলো প্রতিটি ৪৮০ টাকা দরে নিবন্ধন ছাড়া তারা কিনত। আর বিদেশে প্রতিটি কলে তারা ৬ পয়সা করে লাভ পেত।
জানা গেছে, সিমগুলোর বেশিরভাগই অচল। তারা একসঙ্গে ৬০-৭০টি সিম সংগ্রহ করত। এর মধ্যে যেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হতো তার বাইরে বাকিগুলো ব্যবহার করত এবং নতুন সিম সংগ্রহ করত।
র্যাব অধিনায়ক ইউসুফ জানান, গণমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে আমরা জেনেছি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বাইরেও বিটিআরসি ও তাদের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশ থেকে প্রতিদিন গড়ে দুই কোটি মিনিট কল আসে।
“সেখান থেকে বোঝা যায় এ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে সরকার কী পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে,” বলেন তিনি।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, “উদ্ধার করা সিমগুলোর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে চাইলে নিবন্ধিনহীন সিম সংগ্রহ করা যায়। যেগুলোর মাধ্যমে জঙ্গিসংশ্লিষ্ট কাজসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করা যায়।
এ ঘটনায় বিটিআরসি’র পক্ষ থেকে বাকলিয়া থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান র্যাব অধিনায়ক।
আমাদের ফেইসবুক লিঙ্ক : ট্রাস্ট নিউজ ২৪