ব্ল্যাকহোল প্রথমে ইনার ডিস্ক থেকে বস্তুকণাগুলা গ্রাস করে নেয়। ফলে ইনার ডিস্কে ভাঙন ধরে। আউটার ডিস্ক থেকে গ্যাস বা বস্তুকণা গিয়ে ইনার ডিস্কের সেই ক্ষত মেরামত করে।
আগে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, এই ইনার ডিস্কের ক্ষত তৈরি আর সেটা মেরামত হওয়ার কয়েক শ বছরের দীর্ঘ প্রক্রিয়া। কিন্তু এই থ্রি-ডি সিমুলেশণে দেখা যায়, এই চক্র পূরণ হতে মাত্র কয়েক মাস সময় লাগে।
অ্যাক্রেশন ডিস্কের এই ক্ষত মেরামত দ্রত হয় কারণ, ব্ল্যাক ধারণার চেয়ে বেশি দ্রুত বস্তু গ্রাস করে, তত দ্রুত ক্ষত তৈরি হয়, তত দ্রুতে আউটার ডিস্কের বস্তু গিয়ে সেই ক্ষত মেরামত করে।
এই গবেষণার ফল কোয়সারের আচরণ ব্যাখ্যা করতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
কোয়াসার এমন এক জ্যোতিষ্ক যা সাধারণ নক্ষত্রের চেয়ে বহুগুণ উজ্জ্বল। আসলে কোয়াসার তৈরিই হয় ব্ল্যাকহোলের কারণে। যখন কোনো নক্ষত্র ব্ল্যাকহোলের খুব কাছ দিয়ে যায়, তখন সেই নক্ষত্রের ওপর ব্ল্যাকহোলের বিষম মহাকর্ষীয় টান তৈরি হয়।
বিষম কেন?
নক্ষত্রের যে পাশটা ব্ল্যাকহোলের দিকে থাকে, সেই পাশে মহাকর্ষীয় টান প্রবল। অন্যদিকে যে পাশটা ব্ল্যাকহোলে বিপরীত দিকে থাকে, সেদিকে ব্ল্যাকহোলের মহাকর্ষীয় টান তুলনামূলক অনেক কম। দুই পাশে বিষম মহাকর্ষ টানের কারণে নক্ষত্রের ভেতরের ভারসাম্য নষ্ট হয়। নক্ষত্রটা তখন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। ভেঙে যাওয়া সেই নক্ষত্রের ভেতরকার বস্তুকণা জমা হয় ব্ল্যাকহোলের অ্যাক্রেশন ডিস্কে। তখন ব্ল্যাকহোলে অ্যক্রেশন ডিস্কওি বহুগুণে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এটাকেই আসলে কোয়াসার বলে।
এ ছাড়া দুটি গ্যালাক্সি তাদের সমস্ত গ্রহ-নক্ষত্র বুকে নিয়ে পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষ করে এবং দুটিতে মিলে একটা বিশাল গ্যালাক্সি তৈরি করে। প্রতিটা গ্যালাক্সির কেন্দ্রে একটা করে সুপারম্যাসিভ বা অতিভরের ব্ল্যাকহোল থাকে। যখন দুটি গ্যালাক্সির মধ্যে সংঘর্ষ হয়, তখন ভারী গ্যালাক্সির অতিভরের ব্ল্যাকহোলটি তুলনামূলক ছোট গ্যালাক্সির গ্রহ-নক্ষত্রদের গ্রাস করে। তখন সেই ব্ল্যাকহোলের অ্যাক্রেশন ডিস্ক উজ্জ্বল হয়ে কোয়াসারের জন্ম দিতে পারে। শুধু কোয়াসার নয়, রাতের আকাশে অন্যান্য যেসব অতি উজ্জ্বল জোতিষ্ক দেখা যায়, সেগুলোর বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করতে তাদের এই গবেষণা ভূমিকার রাখবে বলে মনে করছেন গবেষকদলটি।
আমাদের ফেইসবুক লিংক : ট্রাস্ট নিউজ ২৪