রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে আগুন লাগানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের যুক্তি— একই সঙ্গে মার্কেটের শেষ প্রান্তের তিন কোনার তিনটি দোকানে আগুন লাগা কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বুধবার দিনগত রাতে হঠাৎ করে পূর্ব-দক্ষিণ কোনায় হক বেকারির কনফেকশনারিতে আগুনের সূত্রপাত। এর ঠিক এক থেকে দেড় মিনিটের মধ্যে পশ্চিম-উত্তর কোনায় আরেকটি দোকানে আগুন দেখা যায়। একই সময় দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের আরেকটি দোকানেও দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। একসঙ্গে মার্কেটের শেষ প্রান্তের তিন কোনার তিনটি দোকানে আগুন কীভাবে লাগল? কেউ আগুন না লাগালে কীভাবে একসঙ্গে মার্কেটের শেষ প্রান্তের দোকানগুলোতে আগুন লাগবে।
কৃষি মার্কেটের ‘খ’ ব্লকে রেডিমেট কাপড়ের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, মার্কেটের পাশেই আমার বাসা। প্রথমে যখন আগুন লাগে, তখন মানুষের চেঁচামেচি শুনে আমি দ্রুত দোকানে দৌড়ে আসি। এসে দেখি মার্কেটের পূর্ব পাশে হক বেকারিতে আগুন লেগেছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই পশ্চিম পাশের উত্তর কোনায় আরেকটি দোকানে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। একই সঙ্গে পশ্চিম-দক্ষিণ কোনার শেষ প্রান্তে আরেকটি দোকানে আগুন জ্বলে ওঠে। মার্কেট বন্ধ থাকায় কেউ মার্কেটে এসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
‘খ ব্লকের’ আরেক কাপড় ব্যবসায়ী মো. জামাল বলেন, আমার দোকানে প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল ছিল। গতকাল রাতে দোকান গুছিয়ে বাসায় যাই। আজকে মার্কেট বন্ধ, তাই একেবারে দোকান থেকে নগদ টাকা নিয়ে যাই। হঠাৎ করে রাত ৩টার দিকে দেখি মানুষের চেঁচামেচি। মার্কেটের পাশে বাসা হওয়ায় দ্রুত বাসা থেকে বের হয়ে মার্কেটে আসি। এসে আমিও তিন কোনায় তিনটি পৃথক দোকানে আগুন দেখতে পাই। এই আগুন পরিকল্পিত।
তিনি বলেন, যেখানে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, সেই জায়গায় থেকে সামনের কাঁচা মার্কেটে যেতে মাঝখানে প্রায় ২০ ফিটের একটি রাস্তা রয়েছে। একসঙ্গে মার্কেটের তিন পাশে আগুন লাগায় দ্রুত পুরো মার্কেটে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কেউ আগুন না লাগালে একসঙ্গে কীভাবে মার্কেটের শেষ প্রান্তের দোকানগুলোতে আগুন লাগে।
প্রায় একই রকম অভিযোগ করে প্রত্যক্ষদর্শী ইসমাইল হোসেন বলেন, আগুন যেখানে লেগেছে, সেই জায়গা থেকে পুরো মার্কেটে আগুন ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই। আজকে মার্কেট সাপ্তাহিক বন্ধ। যে কারণে পরিকল্পনা করে মার্কেটের শেষ প্রান্তের তিন পাশে আগুন লাগানো হয়েছে। এ জন্যই পুরো মার্কেটটি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এ ছাড়া বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী আগুন লাগার একই ঘটনা বর্ণনা করেন।
গতরাত পৌনে ৪টার দিকে আগুনের সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। এর পর মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ, কল্যাণপুর ও হেডঅফিস থেকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১৭ ইউনিট।