দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার হিলি-ঘোড়াঘাট রাস্তার পাশে টং-দোকান। দোকানের ওপর পলিথিনের চালা । দোকানটির মালিক হেলাল মিয়া (৪৩)। দোকানে বসে চালের গুঁড়ার সঙ্গে লবণ, মরিচ ও গোটা একটি ডিমের সংমিশ্রণ তেলে ভাজছেন মুখরোচক ‘ডিমপিঠা’। আর এই পিঠা বিক্রি করে পেট চলে হেলালের। প্রতিদিন তার দোকানে ‘ডিমপিঠা’ খেতে ভিড় করছেন নানা বয়সী ক্রেতা।
হেলাল মিয়া উপজেলার পালশা ইউনিয়নের পুড়ইল-মোল্লাভাগ গ্রামের মোকছেদ আলীর ছেলে। ডিমপিঠার পাশাপাশি তার দোকানে বিক্রি হয়ে থাকে শীতকালীন ভাপা ও চিতই পিঠা, পেঁয়াজু ও সেদ্ধ ডিম।
প্রায় এক যুগ থেকে এ-ই করে আসছেন হেলাল মিয়া । মৌসুমের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয় তার দোকানের খাবারও । গরমকালে তিনি বিক্রি করেন পেঁয়াজু, রসুন ও বেগুনিসহ নানা রকমের তেলে ভাজা চপ। এই দোকান করে হেলাল মাসে আয় করেন প্রায় ৩০ হাজার টাকা।
করোনা মহামারি কিংবা অর্থনৈতিক মন্দার সত্তেও হেলালকে বাধাগ্রস্ত করতে পারেনি কোন কিছুই । ছোট্ট এই দোকান থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে চলছে তার ৪ সদস্যের পরিবার এবং ২ মেয়ের লেখাপড়ার খরচ। সব মিলিয়ে বেশ সুখেই দিন কাটছে তার ।
হেলালের দোকানে দেখা যায় দোকানের দুই ধারে বেঞ্চে বসে আছেন কয়েকজন লোক। এর পাশে দোকানটি ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে আরও প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। পিঠা খাওয়ার জন্য পরিবার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকে ।
হেলালের দোকানে ডিমপিঠা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। চিতই পিঠা ১০ টাকা এবং ভাপা পিঠা ১০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও তেলে ভাজা পেঁয়াজু ৫ টাকা প্রতি পিস। দোকানে চিতই পিঠার সঙ্গে দেয়া হচ্ছে সরিষা ও বাদামের ভর্তা এবং ভাপা পিঠার সঙ্গে গুড়।
হেলাল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন আমার দোকানে গড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা বেচাকেনা হয়। সব খরচ বাদ দিয়ে সেখান থেকে গড়ে আমার লাভ হয় ১ হাজার টাকা। প্রতিদিন বিকেল ৪টায় দোকান শুরু করি এবং রাত ১০টায় বন্ধ করি। সব মিলিয়ে সুখেই আমার সংসার চলছে। উপার্জিত অর্থ থেকে কিছু টাকা সঞ্চয় করছি। মেয়েরা বড় হচ্ছে, তাদের ভবিষ্যতে কাজে দেবে।’