কমতে শুরু করেছে শীত। বাড়ছে তাপমাত্রা। আর শীত কমার সঙ্গে সঙ্গে বোরো চারা রোপণে মাঠে নেমে পড়েছেন দিনাজপুরের কৃষকরা। দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায় বোরো চারা উত্তোলন, রোপণ ও জমিতে হালচাষ দিতে দেখা যায় কৃষকদের।
দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চলে পৌষের শেষেই সাধারণত বোরো চারা রোপণ শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এবার অন্যান্যবারের চেয়ে শীত ও কুয়াশা বেশি। তাই জেলায় অনেক বোরো বীজতলা বিবর্ণ ও নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে ইচ্ছা থাকলেও বোরো চারা রোপণ করতে পারেননি কৃষকরা। কারণ শীত ও কুয়াশায় চারার বৃদ্ধি কম হয়। তবে গত ৪ দিন ধরে শীত কমতে শুরু করেছে জেলায়। বাড়ছে তাপমাত্রা। আর তাই তাপমাত্রা একটু বাড়তেই কৃষকরা মাঠে নেমে পড়েছেন।
তবে জেলার দক্ষিণাঞ্চলে বোরো চারা রোপণ শুরু হলেও উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা এখনো মাঠে নামেননি।
রোববার (২২ জানুয়ারি) বিরামপুর উপজেলার আমবাড়ী বালুপাড়া, হুগলি পাড়া, চিরিরবন্দর উপজেলার পুনট্রি, মুছা শাহা ও আমতলি এলাকায় ব্যাপকভাবে বোরো চারা রোপণের দৃশ্য দেখা গেছে। বীজতলা থেকে চারা তোলা, বোরো চারা রোপণ ও হাল চাষ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও শ্রমিকরা।
বিরামপুর উপজেলার আমবাড়ী বালুপাড়া গ্রামের কৃষক আছিম উদ্দিন জানান, তিনি অন্যান্যবার এ সময় বোরো চারা রোপণ করে ফেলেন। কিন্তু এবার শীত বেশি হওয়ায় একটু দেরিতে চারা রোপণ শুরু করেছেন।
চিরিরবন্দর উপজেলার পুনট্রি এলাকার একরামুল হক জানান, তিনি সাত বিঘা জামতে বোরো ধান চাষ করবেন। শীত ও কুয়াশার কারণে এবার দেরিতে মাঠে নেমেছেন। তবে সার কীটনাশক সঠিক সময় সরবরাহ ও দাম কম পাওয়ায় তিনি এই সামান্য সময় পিছিয়ে যাওয়াকে সমস্যা মনে করছেন না।
কৃষি শ্রমিক আব্দুল মালেক বলেন, এবার এক সপ্তাহ বিলম্বে বোরো চারা রোপণ শুরু হয়েছে। এখন চারদিক থেকে জমির মালিকদের ডাক শুরু হয়েছে।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৭১ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এবার ৯ হাজার ৪৩৭ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নূরুজ্জামান বলেন, অতিমাত্রার শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে কৃষক একটু সময় নিয়ে মাঠে নেমেছে। তাপমাত্রা বাড়ছে। অল্প সময়ে বোরো চারা রোপণের মধ্য দিয়ে মাঠ ভরে যাবে। কৃষক আমন ধানের দাম পেয়েছে। বোরো চাষ লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। সার কীটনাশকের কোনো সংকট নেই।
আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়া সহকারী মো. আসাদুজ্জামান জানান, দিনাজপুরে ১৯ তারিখ থেকে একটু একটু করে তাপমাত্রা বাড়ছে। শীত ও কুয়াশা কমছে।