ঠাকুরগাঁও শহরের বাজস্ট্যান্ড এলাকায় একটি মার্কেটের নিচে ঠান্ডায় ঘুমিয়ে থাকা মোবার কে ডেকে কম্বল দেন জেলা প্রশাসক। মোবারক তখন আবেগে বলেন, এই শিতের রাইতত ঠিক মতন নিন্দাবা পারু না। সারাদিন ভিক্ষা করে রাইতত জারের তানে নিন্দ ধরে না। আইজ স্যার আসে একটা কম্বল দিল। এলা রাইতত শান্তিতে নিন্দাবা পারিম। সারাদিন ভিক্ষা করে খাওয়ার ব্যাবস্থা হলেও রাতে ঘুমান মার্কেটের নিচে।
ঠান্ডায় কোন কম্বল না থাকায় একটি ছেড়া বস্তা গায়ে দিয়ে শুয়ে ছিলেন। কম্বলটি পেয়ে আবেগে কান্না করেন এবং দোয়া করেন। শনিবার রাতে বছরের প্রথম দিনে শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে শীতার্থ অসহায় ভবঘুরে দরিদ্র মানুষকে প্রায় ২শ শীতবস্ত্র কম্বল বিতরণ করেছেন জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান ও তার পরিবার।
এসময় বাজস্ট্যান্ড এলাকার এক রিক্সা চালক মোখলেসুরকেও কম্বল দেন জেলা প্রশাসক। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারাদিন রিক্সা চালাই। সরকারের পক্ষ হতে শীতে কম্বল দেওয়া হয় ঠিকই কিন্তু অনেকক্ষন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে কম্বল নেওয়া সম্ভব হয় না। আজ হঠাৎ স্যার এভাবে কম্বল দিবে কোনদিন ভাবতেও পারি নাই আমি।
আধুনিক সদর হাসপাতালের বারান্দায় শীতে জরোসরো হয়ে বসে থাকা এক বৃদ্ধ চাচাকে দেখে গাড়ি থেকে নেমে কম্বল দেন জেলা প্রশাসকের স্ত্রী। বৃদ্ধ চাচা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকার পরে দু হাত তুলে দোয়া করেন। বৃদ্ধ চাচা এসময় বলেন, মোর বেটি অসুস্থ। হসপিটালত ভর্তি করাইছু। ওইঠে মোক থাকিবা দেয় না ওইতানে বাহিরত বসে আছু। কাপড়ও আনু নাই ওইতানে ঠান্ডায় কাপেছিনু। কুন্ঠে থেকে যে মাইগেনা আসে মোক কম্বল দিল মুই তো বুঝিবার পারিনু নাই।
এর আগে জেলা প্রশাসক ও তার পরিবার শহরের কালিবাড়ি এলাকার হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কম্বল বিতরণ করেন। এছাড়াও শহরের রেল স্টেশন, রোড এলাকা, হসপিটাল, চৌরাস্তা সহ রাস্তার পাশে শুয়ে থাকা অসহায় শীতার্থ মানুষদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন। জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের প্রকোপটা অনেক বেশি। আর প্রশাসন মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছানোর জন্য এই উদ্যাগ।
আমাদের ফেইসবুক Link : ট্রাস্ট নিউজ ২৪