পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে বিয়ের দাবিতে এক সন্তানের জননী (২০) তার প্রেমিকের বাড়িতে গত ৫ দিন থেকে অনশন করেছেন। এরপরে মেনে না নেওয়ায় বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করার খবর পাওয়া গেছে।
তরুণীর পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। এ নিয়ে ওই এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
গতকাল শনিবার (৭ মে) সকাল ১০টায় উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের মানসুরাবাদ গ্রামে নিজ বাবার বাড়িতে তরুণী বিষপান করেন। পরে পরিবারের লোকজন টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।
এর আগে গত সোমবার (৩ মে) থেকে বিয়ের দাবিতে সুবিদখালী বাজারের আলী বাংলা চাইনিজ সংলগ্ন রায়হানের বাসায় অনশনে বসেছিলেন ওই তরুণী। পরে গত শুক্রবার বিকালে তরুণীর বাবা এসে তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।
তরুণীর প্রেমিক মো. রায়হান (২৫) সুবিদখালী বাজারের সার ও কীটনাশক বিক্রেতা আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের ছৈলাবুনিয়া গ্রামের মতি মৃধার ছেলে। প্রেমিকা মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের মানসুরাবাদ গ্রামের জব্বার জোমাদ্দারের মেয়ে।
ওই তরুণী জানান, ৪ বছর আগে শহীদুল্লাহ নামে একজনের সঙ্গে তার বিয়ে হয় এবং তার একুটি ৩ বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। কয়েক মাস আগে দাম্পত্য কলহের কারণে আত্মহত্যা করার উদ্যোগ নিয়ে সুবিদখালী বাজারের রায়হানের কীটনাশকের দোকান থেকে বিষ ক্রয় করে পান করতে গেলে রায়হান তাতে বাধা দেয়। এতে তাদের মধ্যে সহমর্মিতা ও সহানুভূতির সৃষ্টি হয় এবং ধীরে ধীরে সেটা প্রেমের সম্পর্কের পরিণতি হয়। প্রেমের সম্পর্ক চলাকালে রায়হান বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনেকবার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন । এমনকি রায়হান কৌশলে তার আগের স্বামীকে তালাক দিতেও বাধ্য করেন।
ওই তরুণী আরো জানায়, বিয়ের কথা বললে রায়হান অস্বীকৃতি জানায়। পরে সে বিয়ের দাবিতে রায়হানের বাড়িতে গত পাঁচ দিন যাবৎ অবস্থান করেন।
এদিকে বিয়ের দাবি নিয়ে তরুণী তার প্রেমিক রায়হানের বাড়িতে অবস্থান নিলে প্রেমিক রায়হান নিজে গা ঢাকা দেন। তরুণী বাড়িতে থাকাকালে রায়হানের মা-বাবা বিভিন্নভাবে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে এবং বিষপানে আত্মহত্যা করতে বলে। পরে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শুক্রবার (৬ মে) রাতে তরুণীর বাবা তাকে দেখতে আসলে বাবার সঙ্গে সে নিজ বাড়িতে চলে যায়। এরপর মানসিকভাবে ভেঙে পড়লে কোনো উপায় না পেয়ে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। এরপর ওই তরুণীর পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
আমাদের ফেইসবুক লিংক : ট্রাস্ট নিউজ ২৪