জীবন দিয়ে হলেও মাতৃভূমিকে রক্ষা করবো, ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে সতর্ক করেছে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার ‘লাইন অব কন্ট্রোলে’ দু’দেশের পাল্টাপাল্টি হামলায় হতাহতের ঘটনায় নয়াদিল্লিকে সতর্কবার্তা দিয়েছে ইসলামাবাদ। শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) পাক মিলিটারিয়া উইং এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ভারতীয় গণমাধ্যমে এসেছে দু’পক্ষের লড়াইয়ে ভারতীয় সেনারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে নয়াদিল্লি যদি সীমান্তে উত্তেজনার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আমরা একইভাবে জবাব দেব’। সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বিবৃতিতে দাবি করে, ‘ভারতীয় বাহিনী বিনা উস্কানিতে সীমান্তে বসবাসরত নিরীহ মানুষদের লক্ষ্য করে মর্টার ও গুলি বর্ষণ করেছে। হামলার জবাবও দেয় পাকি বাহিনী। কিন্তু নিজেদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে জনগণের সামনে অপদস্থ হয়েছে ভারতীয় বাহিনী। নিজেদের ভুল না বের করে তারা আবারো সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধে মেতেছে।’
পাক সেনারা ভারতীয় হামলার উপযুক্ত জবাব দিয়েছে বলে জানায় পাক আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর- আইএসপিআর। বিবৃতিতে আইএসপিআর উল্লেখ করে, পাল্টাপাল্টি হামলায় বেশিরভাগ ভারতীয় সেনা প্রাণ হারিয়েছে। তবে এ নিয়ে বরাবরের মতোই মিথ্যাচার করছে নয়াদিল্লি। পাক বাহিনী কখনো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায় না। শান্তি বজায় রাখাই তাদের আদর্শ বলেও উল্লেখ করে আইএসপিআর। তবে ভারত যদি নিজেদের আচরণ না পাল্টায় এবং উস্কানিমূলক আচারণ অব্যাহত রাখে পাকিস্তান যথাযথ জবাব দিতে প্রস্তুত।
২০২০ সালে ২ হাজার ১৫০ বারের বেশি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে ভারত। যা আঞ্চলিক শান্তি ও সুরক্ষার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে পাকিস্তান। এদিকে ভারতীয় বাহিনীর বরাতে দেশটির গণমাধ্যম বলছে, বিনা প্ররোচনায় জম্মুর পুঞ্চ এবং উত্তর কাশ্মীরের গুরেজ থেকে উরি পর্যন্ত এলাকায় হামলা চালায় পাকিস্তানি সেনা। তাতে ভারতের চার সেনা ও এক বিএসএফ সাব ইনস্পেক্টর-সহ ১১ জন নিহত হন। বাকি ৬ জন গ্রামবাসী। নিহত সেনাদের মধ্যে সুবোধ ঘোষ পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। নিহত আর এক সেনার নাম হরধনচন্দ্র রায়। তবে তিনি কোন রাজ্যের বাসিন্দা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বাকি দুই সেনার পরিচয় এখনও প্রকাশ করেনি সেনাবাহিনী। গুরুতর আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন জওয়ান ও স্থানীয় বাসিন্দা। ভারতের সীমান্ত বাহিনীর পাল্টা হামলায় ৮ জন পাক সেনা নিহতের কথা উল্লেখ করে গণমাধ্যমগুলি।
বিশ্বের অন্যতম স্পর্শকাতর সীমান্তগুলোর মধ্যে একটি ‘লাইন অব কন্ট্রোল’। হঠাৎ এই সীমান্তে প্রতিবেশী দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা আঞ্চলিক অস্থিরিতা বাড়ার আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। দু’দেশের রক্তক্ষয়ী সংঘাতে সীমান্ত এলাকার বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হার বাড়বে। এদিকে, ভারতের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা পাকিস্তানের দিকে দোষ চাপিয়ে দাবি করছেন, শীতে কাশ্মীরে তীব্র তুষারপাতের আগেই জঙ্গি অনুপ্রবেশে লক্ষ্য করেই নিয়ন্ত্রণরেখায় তৎপরতা অনেকটাই বাড়িয়েছে পাকিস্তান। তবে ইসলামাবাদ কখনো সফল হবে না বলেও জানায় ভারত।