মঙ্গলগ্রহে অক্সিজেন উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, কার্বন ডাই অক্সাইডপূর্ণ গ্রহটিতে দুই বছরের চেষ্টায় অক্সিজেন গ্যাস তৈরি করা হয়েছে। এই অক্সিজের ওপর নির্ভর করে গ্রহটিতে নামতে পারবে মানুষ। তবে তার আগে আরও কিছু পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার রোভার কিছু পরীক্ষামূলক বস্তু নিয়ে গেছে মঙ্গলগ্রহে। তার মাধ্যমেই তৈরি করা হয়েছে অক্সিজেন। একে বড় সাফল্য হিসেবে অভিহিত করলেও সতর্ক বিজ্ঞানীরা। আবু ধাবির নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখনও অক্সিজেন সমৃদ্ধ এলাকার নকশা পুরোপুরি তৈরি করা হয়নি।
নাসার এই রোভারকে বলা হচ্ছে হোপ প্রোব। ২০২১ সালে নাসার প্রাণের সন্ধানকারী প্রোবটি যখন মঙ্গলগ্রহে অবতরণ করে তখনই অক্সিজেন তৈরির যন্ত্রটি নিয়ে যাওয়া হয়। এর নাম ইন-সাইটু রিসোর্স ইউটিলাইজেশন এক্সপেরিমেন্ট (মক্সি)।
মক্সিকে ব্যবহার করে নাসা এখন পর্যন্ত ১২২ গ্রাম অক্সিজেন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। একজন মানুষের মহাশূন্যে ১০ মিনিট বেঁচে থাকার জন্য প্রায় পাঁচ গ্রাম অক্সিজেন লাগে। ফলে এই পরিমাণ অক্সিজেনে একজন মহাকাশচারী প্রায় তিন ঘণ্টা মঙ্গলের বুকে বেঁচে থাকতে পারবেন।
মক্সির এই সাফল্যে উচ্ছসিত বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর বাইরে বসতি গড়ার পরিকল্পনায় এটা বড় মাইলফলক বলে দাবি তাদের। এই পরীক্ষায় দেখা গেছে, জীবন ধারণকারী গ্যাস তৈরিই শুধু নয়, বরং লাল এই গ্রহে রকেট জ্বালানিও তৈরি করা সম্ভব। এতে করে পৃথিবী থেকে জ্বালানি বহন করতে হবে না। মহাকাশে যেতে যে রকেট ব্যবহৃত হয়, তা চালানোর জন্যও অক্সিজেন লাগে
মঙ্গল গ্রহ মানুষের বসবাসের জন্য পুরোপুরি অনুপযুক্ত। এই গ্রহের বায়ুমণ্ডলের ৯৫ শতাংশই কার্বন ডাই-অক্সাইড। তবে নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্স রিসার্চ গ্রুপের প্রধান দিমিত্রি আত্রি বলেন, ‘শুনতে অবাক লাগলেও ভবিষ্যতে মঙ্গলগ্রহে যাওয়া কিংবা বসবাস করা খুবই সাধারণ ব্যাপার হতে পারে।
২০২১ সাল থেকে মঙ্গলগ্রহে থাকা হোপ এর পাঠানো ছবি দিয়ে বিশেষজ্ঞরা মঙ্গলের ম্যাপ তৈরি করার চেষ্টা করছেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, তারা মঙ্গলে বসতি স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। চলতি বছর জুনে মঙ্গলের মতো একটি পরিবেশ তৈরি করে পরীক্ষা করা হচ্ছে যেখানে আগামী বছর থেকে বিজ্ঞানীরা থাকতে শুরু করবেন।