পরিবেশ ধ্বংসের অন্যতম কারণ বলা যেতে পারে প্লাস্টিককে। অথচ এই প্লাস্টিক দিয়ে রাস্তা তৈরি করে হইচই ফেলে দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদের আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের রাস্তায় প্লাস্টিকের কার্পেটিং করা হয়েছে। ‘ওয়ার্ল্ড উইদাউট প্লাস্টিক’ প্রোগ্রামের মেগা প্রকল্পের আওতায় পাকিস্তান কোকাকোলা, ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি এবং ন্যাশনাল ইনকিউবেশন সেন্টারের সহযোগিতায় এটি করা হয়েছে।
রাস্তাটি তৈরি করতে তারা ব্যবহার করেছে প্রায় ১০ টন ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক। যা মূলত সারাদেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়। আর এটি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ২১ মিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি। ধীরে ধীরে পাকিস্তানের অন্যান্য সড়কগুলোও প্লাস্টিক দিয়ে রি-কার্পেটিং করা হবে বলে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি সড়কগুলো সাধারণ সড়কের তুলনায় দ্বিগুণ দীর্ঘস্থায়ী এবং প্রায় ৫১ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হয়।
এর আগে ইসলামাবাদের রাস্তাগুলো ঠিক কোন ধরনের, এছাড়া তা মেরামত করতে কোন ধরনের প্লাস্টিক লাগবে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছিল। প্রকল্পটি প্রসঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, এটি এক অন্য ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি। আমি খুব খুশি যে, এই ধরনের কাজে বহু লোক যুক্ত হয়েছেন। অনেক লোক কাজ পেয়েছে এবং সরকারের অর্থ বাঁচিয়েছে।
প্লাস্টিক পচনশীল নয় সে কারণে তার রিসাইকেলও সম্ভব নয়। সূত্র অনুযায়ী, দেশটিতে প্রতিবছর ৮৭ হাজার টন বর্জ্য জমা হয়, যার মধ্যে ৫০ বিলিয়ন প্ল্যাস্টিক ব্যাগ। যেগুলোর অপরিকল্পিত ব্যবহারে রাস্তার ক্ষতি ছাড়াও চাষাবাদের জমি নষ্ট করে।
২০১৮ সালে কোকাকোলার পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাপী একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। যেখানে তারা আওয়াজ তুলেছিলেন কোনো জিনিস ফেলে দেয়া যাবে না। সেগুলো দিয়েই নতুন জিনিস তৈরি করতে হবে। আর সে পথেই হাঁটছে পাকিস্তান। মূলত প্লাস্টিকের অপব্যবহার রোধ এবং সবুজ পাকিস্তান গড়ার লক্ষ্যেই এমন উদ্যোগ।
প্লাস্টিক দিয়ে রাস্তা তৈরির কৌশল প্রথম দেখিয়েছিলেন ভারতের মাদুরাইয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যাপক রাজা গোপালান বাসুদেবন। ২০২১ সালে বিটুমিনের মিশ্রনের সঙ্গে বর্জ্যপ্লাস্টিকের মিশ্রন দিয়ে এই পদ্ধতিটি দেখিয়েছিলেন তিনি। এরপর দেশটির বিভিন্ন জায়গায় এমন সড়ক তৈরি করা হয়। ভারত-পাকিস্তান ছাড়া ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে এ পদ্ধতিতে রাস্তা তৈরি হচ্ছে।
আমাদের ফেইসবুক Link : ট্রাস্ট নিউজ ২৪