সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স আজ বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ৫০০ জনকে টিকিট দেবে। এদিন ১ থেকে ৫০০ পর্যন্ত টোকেনধারীদের ডেকেছে এয়ারলাইন্সটির বাংলাদেশ কার্যালয়। এদিকে কারওয়ান বাজারে হোটেল সোনারগাঁওয়ে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের কার্যালয়ের সামনে ও ভেতরে টিকিটের প্রত্যাশায় অপেক্ষা করছেন কয়েকশ’ প্রবাসী।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান জানিয়েছেন, প্রবাসীদের সৌদি ফিরতে সাউদিয়া যে কয়টি ফ্লাইটের অনুমোদন চাইবে, তারা দিতে প্রস্তুত আছেন। এ ছাড়া বিমান বাংলাদেশও যেন সৌদিতে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারে, সে দিকটিও তারা দেখছেন। সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়াতে চাইলে অনুমতি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। এছাড়া সৌদি আরবে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ল্যান্ডিং পারমিশন (অবতরণের অনুমতি) পেয়েছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। আগামী ১ অক্টোবর থেকে তারা সৌদিতে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে।
এদিকে আপাত দৃষ্টিতে সৌদি আরব যাওয়ার সমস্যার একটি বিহিত হলেও মিলছে না স্বস্তি। কারণ ওয়ার্ক পারমিট বা আকামার নতুন মেয়াদ ১৭ অক্টোবরের মধ্যে সৌদি ফিরতে পর্যাপ্ত ফ্লাইট নেই বাংলাদেশ বিমান কিংবা সৌদি এয়ারলাইনসের। এতে আবারও আকামার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করতে হতে পারে বাংলাদেশ সরকারকে। এছাড়া সৌদিতে বিমান বাংলাদেশের নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনার সিডিউল এখনও পাওয়া যায়নি। চ্যালেঞ্জ আছে নমুনা সংগ্রহের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড সনদ নিয়ে সৌদি আরব পৌঁছানোর।
২৬ ও ২৭ এবং ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস জেদ্দা ও রিয়াদে যে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পেয়েছে তা কোন নিয়মিত ফ্লাইট নয়। চার্টার্ড ক্যাটাগড়িতে এ চারটি ফ্লাইটে করোনা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সর্বোচ্চ ১ হাজার জন যাত্রী যেতে পারবেন। প্রবাসীদের দাবি, এভাবে দেশে আটকা পড়া প্রায় ৩৫ হাজার প্রবাসীকে সৌদি আরব পাঠাতে ফ্লাইট দরকার পড়বে কমপক্ষে ১৩০টি। কিন্তু ওয়ার্ক পারমিট বা আকামার নতুন মেয়াদ ১৭ অক্টোবরের মধ্যে এতোগুলো ফ্লাইট পরিচালনার সক্ষমতা সৌদি ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের আছে কি?
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান জানান, সৌদি আরব বাণিজ্যিক ফ্লাইটের অনুমতি দিলে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২টি করে ফ্লাইট পরিচালনার সক্ষমতা রয়েছে বাংলাদেশের। এদিকে সৌদি কর্তৃপক্ষ নিয়মিত ফ্লাইটের বাইরে মাত্র ১টি বিশেষ ফ্লাইটের অনুমতি চেয়েছে, যদিও বাংলাদেশ সৌদি এয়ারলাইনসকে যতটা সম্ভব ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সঠিকভাবে তথ্যটা পাচ্ছি না সৌদি এয়ারলাইনসের পক্ষ থেকে আসলে জটিলতাটা কোথায় বাংলাদেশ বিমানকে সিডিউল ফ্লাইট অনুমোদন দিতে। তারা যতটা ফ্লাইট চায় আমরা ততটাই দিব। সেটা অন্য ফ্লাইটের সাথে অ্যাডজাস্ট করে হলেও। কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের তেমন সাড়া পাইনি।’
ফলে আকামার নতুন মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও হাজার হাজার প্রবাসীর কাজে ফিরতে না পারার শঙ্কা রয়েই গেছে। এছাড়া ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোভিড সনদ বাধ্যতামূলক করেছে সৌদি সরকার। অভিবাসী নিয়ে কাজ করা সংস্থা রামরুর পরিচালক মেরিনা সুলতানা বলছে, আপাতত জটিলতা নিরসন হয়েছে মনে হলেও চ্যালেঞ্জ অনেক।
এমন অবস্থায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলছেন, প্রবাসীদের কাজে ফিরতে যাওয়া নিশ্চিতে তারা সবধরনের ব্যবস্থাই নেবেন। এদিকে কাজে ফেরত যেতে নিয়োগকর্তা বা কোম্পানীর অনুমতিপত্র প্রদর্শনেরও কথা বলছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। সবমিলিয়ে হাজার হাজার প্রবাসীর কাজ ফিরতে যাওয়া নিশ্চিতে এখনও রয়ে গেছে অনেক চ্যালেঞ্জ।