উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ১ সপ্তাহ অনশন করার পর অধ্যাপক জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হকের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা আজ বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে অনশন ভাঙেন।
ক্যাম্পাসে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাসপাতাল থেকে এসে অনশন ভেঙেছেন অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীরাও।
দাবি আদায়ে সাবেক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের আশ্বাসে অবশেষে অনশন ভেঙেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার গভীর রাতে ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে যান জনপ্রিয় লেখক জাফর ইকবাল। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী।
আন্দোলনত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার সময় জাফর ইকবাল জানান, উচ্চ পর্যায়ে তার আলোচনা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন। এ কারণেই তিনি ক্যাম্পাসে ছুটে এসেছেন।
অনশন না ভাঙিয়ে ফিরে যাবেন না বলেও জানান জনপ্রিয় এ লেখক। তার অনুরোধে অবশেষে অনড় অবস্থান থেকে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে রওনা দিয়ে ভোরে ক্যাম্পাসে পৌঁছান বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক দুই অধ্যাপক।
প্রিয় শিক্ষককে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। তার কাছে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও করেন।
জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘তোমরা কেন তোমাদের জীবন অপচয় করবা? তোমাদের বাঁচতে হবে। তোমরা ইতোমধ্যেই বিজয়ী হয়ে গেছো।
‘সারা দেশের মানুষ তোমাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের ঘুম হারাম করে দিয়েছো। জীবন অনেক মূল্যবান। তুচ্ছ বিষয়ে জীবন অপচয় করা যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আমার বাসায় আলোচনা হয়েছে। তারা বাসায় এসেছিল। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তোমরা যা চাইছো, যে দাবি তোমাদের, সেটা পূরণ হবে। তোমাদের ওসিলায় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক হবে।
তাদের সঙ্গে আলোচনার পর আমরা দেরি করিনি; সরাসরি এখানে চলে এসেছি। আমরা তোমাদের অনশন না ভাঙিয়ে যাব না।’
শিক্ষার্থীদের জাফর ইকবাল জানান, নিশ্চিত হয়েই এসেছেন যে তাদের দাবি পূরণ হবে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র শাহরিয়ার আবেদিন বলেন, ‘উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব।’
আন্দোলনরতদের একটি দল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে সমাবেত হয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেন। সে সময় ছাত্রদের একটি প্রতিনিধি দল অনশন ভাঙার অনুরোধ জানান। এ দলের নেতৃত্বে ছিলেন মোহাইমিনুল বাশার রাজ।
অনশনকারীরা কর্মসূচিতে অটল থাকার ঘোষণা দেয়ার পর রাজ বলেন, ‘আমরা তাদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে অনশন ভাঙার অনুরোধ করেছিলাম। কারণ তাদের জীবনের চেয়ে মূল্যবান কিছু নেই। আমরা আমাদের কোনো সহযোদ্ধা হারাতে চাই না। তবে তাদের জোর করার কিছু নেই। তাদের ওপর কিছু চাপিয়ে দেব না। আমরা তাদের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই।
‘এর পরেও আমরা অনশন থেকে সরে এসে আন্দোলনের বিকল্প পথ খোঁজা যায় কি না, এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাব।’
আমাদের ফেইসবুক লিঙ্ক : ট্রাস্ট নিউজ ২৪