বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়েরের (বুয়েট) মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হোসেন যিনি শেরেবাংলা হলের নিচতলায় ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তিনি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পানি ও গ্যাস চুক্তির বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর ।
ওই দিনই শেরেবাংলা হলের গেস্টরুমে আসামিরা সভা করে বুয়েটের ছাত্র আবরারকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।
স্ট্যাটাসটি যখন দিয়েছিলেন তখন তিনি কুষ্টিয়ায় গ্রামের বাড়িতে ছিলেন। পর দিন (৬ অক্টোবর) বিকালে তিনি বাড়ি থেকে বুয়েটের হলে ফেরেন।
হলে ফেরার কয়েক ঘণ্টার মাথায় রাত ৮টার দিকে আবরারসহ দ্বিতীয় বর্ষের সাত-আটজন ছাত্রকে শেরেবাংলা হলের দোতলার ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে পাঠান তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাত-আটজন নেতা।
তারা আবরার ফাহাদের মোবাইল নিয়ে ফেসবুক ও মেসেঞ্জার ঘেঁটে দেখেন। এর পর ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে আবরারকে পেটাতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আরও কয়েকজন নেতাকর্মী আসেন। তারা আরেক দফা পেটান আবরারকে।
একটি গোয়েন্দা সংস্থা জানায়, ২০১৯ সালের গত ৫ অক্টোবর ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন আবরার। যেখানে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পানি ও গ্যাস চুক্তির বিষয়ে একরকম ভিন্নমত পোষণ করেন আবরার। সেই স্ট্যাটাস ইশতিয়াক মুন্নার নজরে আসে।
তিনি একই হলের শিক্ষার্থী বুয়েট শাখা ছাত্রলীগ সহসম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু, উপদপ্তর সম্পাদক মোস্তফা রাফি, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, ক্রীড়া সম্পাদক মেজবাউল ইসলাম জিয়ন ও তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকারকে বিষয়টি জানিয়ে আবরারকে ডেকে আনার নির্দেশ দেন।
তারা সবাই ১৬ ও ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে দুজন রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আবরারকে ডেকে ২০১১ নং কক্ষে নিয়ে যান।
সেখানে নিযে আসার পর আবরারের কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে তার ফেসবুক মেসেঞ্জার চেক করে মুন্না। এ সময় আবরার শিবিরের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ আনা হয়। আবরার এসব অস্বীকার করলে শুরু হয় স্টাম্প দিয়ে তার ওপর পাশবিক নির্যাতন।
মার খেয়ে একপর্যায়ে আবরার অচেতন হয়ে পড়লে কোলে করে মুন্নার কক্ষে (২০০৫ নং) নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে দোতলা ও নিচতলার সিঁড়ির মধ্যবর্তী জায়গায় অচেতন আবরারকে নিয়ে যান তারা।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, অচেতন আবরারের চিকিৎসার জন্য হল প্রভোস্ট ও চিকিৎসককে খবর দেয় ছাত্রলীগের সেসব কর্মী। কিন্তু এরই মধ্যে প্রাণ হারান আবরার।
চিকিৎসক এসে আবরারকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়।
আমাদের ফেইসবুক Link : ট্রাস্ট নিউজ ২৪