দিনাজপুরে নারী ও শিশু পাচারকারী সন্দেহে এক নারীসহ ৩ জনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা। আটককৃতরা হলেন-কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জের গ্রামের পাষান বেপারীর মেয়ে বিউটি খাতুন (১৯), নীলফামারী জেলার উত্তর চাওড়া গ্রামের আলতাফ হোসেনের পুত্র জাকির হোসেন (২০) এবং একই এলাকার ভুপেন রাযের পুত্র বিপুল রায় (১৯)।
শনিবার (১৭ অক্টোবর) সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে দিনাজপুর শহরের ৫ নং উপশহর খেরপট্টি এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। স্থানীয় লোকজন জানান, উপশহরের খোদমাধবপুর বানিয়াপাড়ার মোস্তফা কামালের মেয়ে ঈদগাহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী মেঘলা আক্তার মালা পরীক্ষার খাতা জমা দিতে স্কুলে যাচ্ছিল। পথে ওই ছাত্রীকে বিউটি ও তার সহযোগিরা মোটরসাইকেলে চড়তে বলে। ওই ছাত্রী মোটরসাইকেলে চড়তে আপত্তি করে মালা। এক পর্যায়ে মালার চিৎকার করলে এলাকার লোকজন শুনতে পেয়ে এগিয়ে আসলে মোটরসাইকেল আরোহী জাকির ও বিপুল নামে দুই যুবক মোটরসাইকেলটি (বাজাজ সিটি-১০০ লীলফামারী-হ ১৩-০৭৯০) ফেলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীরা তাদের আটক করে। পরে পুলিশকে খবর দিলে দিনাজপুর কোতয়ালী থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে ৩ জনকে থানায় নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মামলা হয়েঝে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসি জানায়, উপশহরের খোদমাধবপুর বানিয়াপাড়ায় দিনাজপুর জেলাদলের খেলোয়ার পিকের বাসায় গত ২ মাস ধরে বসবাস করছিল আটককৃত বিউটি খাতুন। বিষয়টি স্থানীয় এলাকাবাসির সন্দেহ হলে পিকের বাবা মকছেদ আলী, মাতা খালেদা বেগমকে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, বড় ছেলে পটল’র স্ত্রী’র আত্মীয় বেড়াতে এসেছে। এর কয়েক দিন পর স্থানীরা জানতে পারে বিউটি একজন কবিরাজ ঝাড়-ফুক, সন্তান না হওয়া,বাত-ব্যাথার সমাধান দেন। সন্তান হওয়ার জন্য বিউটি কবিরাজি ফি বাবদ সপ্তাহে ৪ হাজার টাকা করে নিতেন এবং ৩ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভধারণ নিশ্চিত হবে সকলের দাবী করতেন বলে বানিয়াপাড়া এলাকার মহিলারা জানান।
বিউটিকে আশ্রয়দাতা খালেদা বেগম জানান, আমরা বিউটিকে ২ থেকে ৩ বার বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছি তাও সে সড়ক দূর্ঘটনার কথা বলে আবার ফিরে আসে। আমার ছোট মেয়ে সূবর্ণার জন্য খাবার কিনে নিয়ে আসে, এখানে সেখানে ডেকে নিয়ে যায়। আমরা জানতে পেড়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছি এবং আমার মেয়েকে সাবধান করে দিয়ে বলেছি বিউটি কোথাও ডাকলে বা যেতে বললে তা যেন না শোনে। ৩ জনকে আটকের সময় বিউটি’র কাছে থাকা একটি ব্যাগের মধ্যে মৃত মানুষের বিভিন্ন হাঁড়, মাছ ধরার বর্ষি, সুই, সিদুর, ক্যামিকেল জাতীয় দ্রব্য, ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ সহ বিভিন্ন প্রকার সরঞ্জাদি পাওয়া গেছে।