পুলিশ কর্তৃক ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যা ঘটনার প্রতিবাদে দিনাজপুরসহ সারা দেশের মানুষ যে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিল,যার ফলশ্রুতিতে আমরা দোষীদের বিচার হয়েছে এবং দোষীদের বিচারে রায় কার্যকর হয়েছে। আমরা মনে করেছিলাম দেশে আর কোন নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হবে না। কিন্ত বাস্তবে আমরা দেশে ভিন্ন চিত্র লক্ষ্য করছি। দেশে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করতে হলে সকল পর্যায়ের দায়িত্বশীল ব্যাক্তিদের দৃষ্টিভঙ্গী বদলাতে হবে। পুলিশি হেফাজতে দিনাজপুরের মেয়ে ইয়াসমিনকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় দিনাজপুরের সাধারণ জনতা আন্দোলনে ফেটে পড়ে। ইয়াসমিন হত্যার প্রতিবাদ করতে যেয়ে যারা সেদিন নিহত হয়েছে তাদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও শ্রদ্ধা ব্যক্ত করেন।
২৪ আগষ্ট’ ২০২১ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় দিনাজপুর দশ মাইল মোড়ে ‘ ইয়াসমিন ট্রাজেডি দিবস’ এ দেশব্যাপি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাখা আয়োজিত মানবন্ধন কর্মসূচীতে বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, দিনাজপুর জেলাশাখার সভাপতি কানিজ রহমান-এর সভাপতিত্বে মানবন্ধন কর্মসূচীতে বক্তারা আরও বলেন, গত ২৬ বছরের পথ চলায় নারীর প্রতি সহিংসতা দূরিকরনের যে অভিজ্ঞতা তাতে দেখা যাচ্ছে যে, নারীর প্রতি সহিংসতা কমেনি। বরং বেড়েছে অনেক গুন বেশী। এবছর জানুয়ারী থেকে জুলাই পর্যন্ত সহিংসতার শিকার কয়েছেন ২ হাজার জনের বেশী নারী। এতে প্রমাণ হয় যে, সমাজের প্রচলিত পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন হয়নি। এই দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তনে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে দেশে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে এ রকম ঘটনায় বিচারের হার মাত্র ৩ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান থেকেই দেশে নারী নির্যাতনের বিচার প্রক্রিয়ার প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠে। নারী নির্যাতনসহ সকল নির্যাতনের ঘটনায় সুরাহা দেয়ার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হতে হবে। তাই এগুলো যাদের দায়িত্ব তাদেরকেই আন্তরিকভাবে সকল ধরনের অপরাধের বিচার করতে হবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রুবিনা আক্তার এর সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচীতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ড.মারুফা বেগম। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি মিনতি ঘোষ, আন্দোলন সম্পাদক গৌরী চক্রবর্তী, সদস্য ফারাবি কবির, শুক্লা কুন্ডু, রুকসানা বিলকিসসহ জেলা ও কাহারোল উপজেলা মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ।