বিলুপ্ত কড়া আদিবাসী নৃ-গোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনে লক্ষ্যে দিনাজপুরে ‘কড়া ভাবনা’ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে।
২৫ ডিসেম্বর শনিবার দুপুরে ভাবনা সমাজ ও মানবিক বিকাশের আয়োজনে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার হালজায় ঝিনাইকুড়ি এলাকায় এই আয়োজন করা হয়।
“ভাবনা’র” প্রধান নির্বাহী মুস্তাফিজুর রহমান রূপমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বীরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাসুদুল হক, জেলা অতিরিক্ত প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আশিকা আকবর তৃষা, পাঠসুত্রের নির্বাহী প্রকাশক তনুজা আকবর, নরসিংদী জেলা রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম, কড়া গ্রামের মাহাতো (প্রধান) যোগেন কড়া, বিমান কড়া প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দিনাজপুরে বিলুপ্ত প্রায় কড়া সম্প্রদায় নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। শুধু তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা নয়, তাদের জীবনমান উন্নয়ন করাও আমাদের লক্ষ্য। এই সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা যাতে করে বিদ্যালয়গামী হয়, পশু পালনের মাধ্যমে সাবলম্বী হতে পারে সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন তারা। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করতেও এ সময় সচেতনতার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এ সময় ওই এলাকায় একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠারও ঘোষণা দেয়া হয়।
অনুষ্ঠান শেষে ২৪ টি কড়া সম্প্রদায়ের পরিবারের মাঝে দুটি করে কম্বল, সাবান, মাস্ক, ও কৃমি নাশক ওষুধ বিতরন করা হয়। পরে কড়া সম্প্রদায়ের নিজস্ব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন তারা।
অনুষ্ঠান শেষে বিমল কড়া বলেন, কম্বল তো দিল দিল সাথে একটা গাওঘুষা সাবান দিল, এইলা একটা কম্বল কিনিবা গেইলে তো ৩০০ টাকার নিচে পাওয়া গেল হয় নাই। এই রকম উপকার আর কে দিবে হামাক এইটা তো বিরাট উপকার, এই যে জাড়ের দিন (শীত) কম্বল টা ঢাকা নিমো কতনা যে উপকার পামো সেটা হামরায় বুঝা পাছি। মালিকের কাছে প্রার্থনা করিম মুই যে যারা দিলি তামাক ভগবান ভালো রাখুক। ওরা ভাল থাকিলে হামাক অবশ্যই ঘুরি দেখিবে।
ভাবনা’র প্রধান নির্বাহী মুস্তাফিজুর রহমান রূপম বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমরা কড়া সম্প্রদায়ের মানুষকে নিয়ে কাজ করছি। কিভাবে তারা সাবলম্বী হয়ে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে পারে সেলক্ষ্য নিয়ে আমড়া এগুচ্ছি। এখানকার শিশুরা ঠিকভাবে বিদ্যলয়ে যেতে পারে না দুরবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়ায় পাশাপাশি কিছু সমস্যাও রয়েছে। ফলে আমরা এই এলাকায় একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে দিবো এই চিন্তাভাবনাও যুক্ত হয়েছে।
বীরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাসুদুল হক বলেন, আপনারা বাংলাদেশের অতি প্রাচীন একটা জনগোষ্ঠী, আমরা চাই অন্য সবার মত আপনারাও এ দেশে মাথা উচু করে বাচুন। এ জন্য শিক্ষাটা খুব জরুরী, আপনাদের জন্য এখানে স্কুলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে করে আপনারা অন্য দের মত লেখা পড়া শিখতে পারেন। সন্তু লারমা যদি প্রত্তন্ত অঞ্চল থেকে দেশের নেতৃত্বে কাজ করতে পারেন তবে আপনারা কেন পারবেন না। শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে আপনারা অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মত দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে কাজ করতে পারবেন।
জেলা অতিরিক্ত প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা আশিকা আকবর তৃষা বলেন, জীবন মান উন্নয়নে গৃহপালিত পশু-পাখী গুরুত্বপূ ভূমিকা রাখে। এর আগে আপনাদের এখানে গরু, ভেড়া, হাস-মুরগী দিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি সরকারী ভাবে প্রতিটি পরিবারে এসমব দেওয়ার জন্য। আপনারা প্রতিটি পরিবার পাবেন তার সাথে ঘর পাবেন।