দিনাজপুরে নতুন চালের তৈরী পিঠা উৎসবে মেতে উঠেছে ছোট্ট শিশু শিক্ষার্থীরা। সোনামণিদের নবান্নে স্বাদ দিতে আয়োজন করে সদর উপজেলার উথরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
৩০ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল থেকে এই পিঠা উৎসবে মেতে ওঠে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা। আর নবান্নের স্বাদ ১শ ২০জন শিক্ষার্থীদের মাঝে বিলিয়ে দিতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. শাকিরা সুলতানা।
তিনি বলেন, নবান্নের স্বাদ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিলিয়ে দিতেই প্রথমবারের মতো এই পিঠা উৎসবের আয়োজন। তা করতে পেরে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করছেন তিনি। পিঠা উৎসবে ভাপা পিঠা, পাটিসাপ্টা, পুলিপুরি, নারিকেল পুরি, গাজরের হালুয়া, পেপের হালুয়া, বুটের বরফি, সেমাই পিঠা, মুড়ির মোয়া, সামুচা পিঠা, চুরি পিঠা, নুনিয়া পিঠাসহ আরও অনেক পিঠার আয়োজন ছিল বলে জানান তিনি।
এই পিঠা উৎসবে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. কামরুজ্জামানসহ আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে নতুন চালের আটার তৈরী পিঠার স্বাদ পেতে উপস্থিত হয়েছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য ফয়সল হাবিব সুমন, সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিকুল আলম, সহকারি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হাই চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম, আরিফুর রহমান খান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও যুবলীগ নেতা মামুন উর রশীদ মামুন, শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী পলাশসহ আরও অনেকে।
উথরাইল ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক রনি আহম্মেদের সহযোগিতায় পিঠা উৎসবে উপস্থিত হয়েছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও যুবলীগ নেতা মামুন উর রশীদ মামুনসহ শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী পলাশ শহর থেকে গ্রামে ছুটে আসেন এই পিঠা উৎসবের স্বাদ নিতে। তারা বলেন, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে নবান্ন উৎসব। পালিত হচ্ছে না, তা বলা যাবে না। হচ্ছে, তবে সীমিত আকারে। ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব আর নেই বললেই চলে। তাই গহীন গ্রামের উথরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই পিঠা উৎসবে অংশ নিতে পেরে আমরা খুবই গর্বিত মনে করছি বলে জানান তারা।
পিঠা উৎসবে সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিকুল আলম বলেন, আমি খুবই মুগ্ধ বিদ্যালয়ে এতো সুন্দর আয়োজনে। এই পিঠা উৎসব প্রতিটি স্কুলে আয়োজিত হলে নবান্ন উৎসব আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হৃদয় থেকে হারিয়ে যাবে না বলে জানান তিনি।
জেলা পরিষদের সদস্য ফয়সল হাবিব সুমন বলেন, আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে বেশ কয়েকদিন হলো। এখনো মাঠভরা পাকা ধান দুলছে হিমেল হাওয়ায়। আর পহেলা অগ্রহায়ন হয়ে গেলো নবান্ন উৎসব। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি, কুলাসহ আরও সামগ্রী ছিল তা এখন কল্পনাতীত। এখন প্রযুক্তি ছোঁয়ায় গ্রামে-গঞ্জে ধান মাড়াই মেশিনসহ চাল থেকে আটা উৎপাদন হচ্ছে। এই আটা দিয়েই নবান্ন উৎসব পালিত হয়েছে। তবে আজকের এই আয়োজন আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সকল শিক্ষক ও সহযোগিতায় ছিলেন যারা।