কুমিল্লা নগরীর একটি পার্কে বাংলা নববর্ষের দিনে বসে থাকা ২ কিশোর-কিশোরীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণর করায় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখাার (ডিবি) দুই সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে, বৃস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবির ওই দুই সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়। তাঁরা হলেন- নজরুল ইসলাম ও রোমান হাবিব রবিন।
সামাজিক যোগাযোগমা্যেমে ওই ২ কিশোর-কিশোরীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের একটি ভিডিও এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ।
সেই ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, নববর্ষের দিন জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় লাগোয়া ‘কুমিল্লার নগর উদ্যানে’ বসে গল্প করছিল দুই কিশোর-কিশোরী। এ সময় পেছন থেকে ভিডিও করতে করতে তাদের সামনে গিয়ে পরিচয় জানতে চান ডিবি পুলিশের একজন সদস্য। তাদের দাঁড় করিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন তিনি। এ সময় কিশোরীর মাস্ক খোলার জন্য বলতে গিয়ে তাকে ‘তুই’ করে সম্বোধন করেন পাশে থাকা আরেক সদস্য। এরপরই পরিচয় জানতে চাওয়া ওই সদস্য কিশোরকে বলেন, ‘মুড়ায়া ছাতনা ছিরালামু একবারে।
এ ছাড়া ডিবির সদস্যরা ঘটনার সময় মেয়েটির বাবার ফোন নম্বর চাইলে তারা ভয়ে মাফ চাইতে থাকে এবং মেয়েটির বাবা বিদেশ থাকেন বলে জানায় ছেলেটি। তখন পাশ থেকে একজন বলেন, ‘বিদেশ থেকে (কিশোরীর বাবা) বাবা আইব এখন, নইলে অফিসে নিয়া যামু। অফিস থেকে অভিভাবক আইসা নিয়া যাইবো। ’ ওই ভিডিওটিতে ছেলেটিকে কয়েকবার মাফ চাইতে দেখা যায়।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, ভিডিওটি ফেইসবুকে দেখেছি। বিষয়টি আমাকে কয়েকজন মৌখিকভাবেও জানিয়েছেন। এটি নজরে আসার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ২ জন পুলিশ সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়। এরপর রাতেই তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
”সচেতন নাগরিক কমিটি” কুমিল্লার সাবেক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ যেকোনো কিছুর ভিডিও ধারণ করতেই পারে। কিন্তু সেটা অবশ্যই দালিলিক প্রমাণ হিসেবে। তবে নগর উদ্যানের কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে যে কথাবার্তাগুলো বলতে শুনেছি, তা কাম্য নয়। তাদের ধারণ করা এ ভিডিও কীভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ল তাও খতিয়ে দেখা দরকার। এ ঘটনায় যদি ওই কিশোর-কিশোরী কেউ আত্মঘাতী কোনো সিদ্ধান্ত নিতো, সেক্ষেত্রে এর দায়ভার কে নেবে?
আমাদের ফেইসবুক লিঙ্ক : ট্রাস্ট নিউজ ২৪