বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যার ঘটনায় স্ত্রী মিন্নির ভূমিকা কী? উত্তর মিলবে আগামীকাল বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আদালতের রায়ে। মাত্র এক বছর তিন মাসে শেষ হচ্ছে আলোচিত এই মামলার বিচার কাজ। বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রাপ্ত বয়স্ক ১০ আসামির রায় কাল। রিফাতের পরিবারের দাবি, হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। আর রিফাতের স্ত্রী মিন্নির পরিবারের দাবি সে নির্দোষ। গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজ গেটে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসী নয়ন বন্ড ও তার বাহিনী। ওই রাতেই গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় রিফাত হত্যার ভিডিও।
পরের দিন ২৭ জুন রিফাতের স্ত্রী মিন্নিকে সাক্ষী রেখে নয়নসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরিফ। এ অবস্থায় ২ জুলাই রাতে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় নয়নবন্ড। এরপরই সমালোচনায় আসে নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। হত্যাকারী নয়ন বন্ডের সঙ্গে গোপন বিয়ে ও ঘনিষ্ঠতার নানা ছবি ভাইরাল হতে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ১৬ জুলাই গ্রেপ্তার হয় মিন্নি, সাক্ষী থেকে আসামী হওয়ায় নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠে। ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পায় মিন্নি। মুসা বন্ড বাদে এজাহারভুক্ত সব আসামীর গ্রেপ্তার শেষে এ বছরের ১ জানুয়ারি আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামীর বিরুদ্ধে ৩০ কার্যদিবস সাক্ষ্য গ্রহণের মাধ্যমে শেষ হয় ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ। ১৬ সেপ্টেম্বর শেষ হয় যুক্তিতর্ক। নিহত রিফাতের বাবা-মা বলছেন, ছেলের হত্যাকারী মিন্নিসহ সকলের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চান তারা।
এদিকে, মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরও চান প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। তবে মিন্নি নির্দোষ বলে দাবি করেন তিনি। মিন্নির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, আমরা সব তথ্য-উপাত্ত ইতোমধ্যে জেলা দায়রা জজ আদালতে উপস্থাপন করেছি। আশাবাদী মিন্নি খালাস পাবে। কারণ, মিন্নি নির্দোষ। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুল হক কিসলুর দাবি, মিন্নির জন্যই সংঘটিত হয়েছে রিফাত হত্যাকাণ্ড, সব আসামীর সর্বোচ্চ শাস্তি হলে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এই রায়।
হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে রিফাত ফরাজি, রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, টিকটক হৃদয়, হাসান বন্ড, মুসা বন্ড ও নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির বিরুদ্ধে ৩৪ ও ৩০২ ধারায় এবং রাফিউল ইসলাম রাব্বি, কামরুল ইসলাম সাইমুন আসামিদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে ২১২ ও ১২০-বি ১ ধারায় এবং আসামী সাগরের বিরুদ্ধে আসামীদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে শুধু ১২০-বি ১ ধারায় অভিযোগ পত্র দিয়েছে পুলিশ।