গত শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর কদমতলীতে একটি ময়লার ভাগাড় থেকে রাকিবুল ইসলাম নামে এক তরুণের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রাকিবুল শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
এই ঘটনার তিনদি৩ দিনের মধ্যেই এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে কদমতলী থানা পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে এ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাসহ ২ জনকে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. রবিন ও রাসেল।
রবিন কদমতলী এলালায় ইন্টারনেট (ওয়াই-ফাই) সংযোগকারী একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী। আর রাসেল রবিনেরই আপন ছোট ভাই।
পুলিশ জানায়, ফ্রি ফায়ার গেম নিয়ে দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে রাকিবুলকে হত্যা করে রবিন। নিজেদের ভাড়ায় বাসায় রাকিবুলের গলায় তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। পরে গভীর রাতে রবিন ও তার ছোট ভাই রাসেল দুজন মিলে বাসার ছাদ থেকে রাকিবুলের মরদেহ ছুড়ে ফেলে ময়লার ভাগাড়ে।
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে কদমতলী থানার মিনাবাগ ২ নম্বর গলির পরিত্যক্ত ময়লার ভাগাড়ে ওই তরুণের মরদেহ পাওয়া যায়। কদমতলী থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে পরিচয় শনাক্ত করে। পরে নিহতের বাবা কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ পরিদর্শক সজীব দে বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করা হয়। এরপর শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ এলাকা থেকে হত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত রবিনকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে, কদমতলী থানা এলাকা থেকে তার ছোট ভাই রাসেলকেও গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, রবিন ও নিহত রাকিবুল মোবাইলে ফ্রি ফায়ার গেমে আসক্ত ছিল। রবিনের স্মার্টফোন না থাকায় তার আইডি নিহত রকিবুলকে আট হাজার টাকায় বিক্রি করে দিতে বলে। নিহত রাকিবুল আইডি বিক্রি না করে রবিনের আইডি’তে নিজেই খেলতে থাকে।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে নিহত রাকিবুল কদমতলী থানার মিনাবাগ এলাকায় গ্রেফতার রবিনদের বাসায় যায়। এসময় রবিন জানতে পারে রাকিবুল তার আইডি ব্যবহার করে ফ্রি ফায়ার গেম খেলছে। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে রবিন উত্তেজিত হয়ে ড্রয়ার থেকে ইন্টারনেটের তার বের করে রাকিবুলকে পেছন থেকে আচমকা গলায় পেঁচিয়ে টান দেয়। এতে রাকিবুল খাটের ওপর পড়ে যায়। এরপর রবিন রাকিবুলের পিঠের ওপরে বসে তার গলায় তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে।
ওইদিন রাতেই আনুমানিক ২টা থেকে ৩টার দিকে অভিযুক্ত রবিন তার ছোট ভাই রাসেলকে ঘটনাটি জানায়। পরে দুই ভাই মিলে রাকিবুলের মরদেহ ওয়্যারড্রোব থেকে বের করে বাসার ছাদে ওঠায় এবং উত্তর পাশের টিনশেড বাড়ির চালের ওপর দিয়ে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেয়।
এরপর ঢাকা ছেড়ে রবিন শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ এলাকায় আত্মগোপন করে। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর তার দেয়া তথ্যমতে কদমতলী থানা এলাকা থেকে তার ছোট ভাই রাসেলকে গ্রেফতার করে।
আমাদের ফেইসবুক লিঙ্ক : ট্রাস্ট নিউজ ২৪