অতিরিক্ত মুনাফার আশায় ইথানলের পরিবর্তে সিনথেটিক কেমিকেল মিথানল মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে সস্তা মদ। আর সেই বিষাক্ত রাসায়নিক পানেই দেশে সম্প্রতি বিষক্রিয়ায় মৃত্যু বেড়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসক ও রাসায়নিক বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বিষাক্ত এ কেমিকেল অকার্যকর করে ফেলে কিডনি ও হার্টকে। দেখে বোঝার উপায় না থাকায় সতর্ক হওয়ার তাগিদ তাদের।
ভেজাল মদ খেয়ে গত দু’দিনে রাজধানীতেই মারা গেছেন একটি বেসরকারি ফার্মের তিন কর্মকর্তা ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। এছাড়া সম্প্রতি বগুড়া ও রাজশাহীতে এবং ২০১০ সালে সিলেটের বালাগঞ্জে বিষাক্ত মদ পানে মারা যান ২০ জনের বেশি।
প্রশ্ন উঠছে মদের মধ্যে কী এমন বিষাক্ত উপাদান মেশানো হচ্ছে যাতে এত দ্রুত মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সস্তা মদে ইথানলের পরিবর্তে মেশানো হচ্ছে মিথানল। যাতে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কিডনি ও হার্ট অকার্যকর হয়ে মারা যাচ্ছেন অনেকে। ডা. ফজলে রাব্বি বলেন, সত্যিকারে ওয়াইন বা মদ। সেটা ইথাইল অ্যালকোহন বা ইথানল। এটা সব সময় ফুডেরে খাবার থেকে উৎপাদন করা হয়। মিথানল যেটা ভেজাল মদ। সেটা ইন্ডাস্ট্রিতে উৎপাদন হয়। ক্যামিলের হিসেবে অন্য কাজে ব্যবহারের জন্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেলের পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, মিথানল অ্যালকোহন দামে কম হলেও সেটা শরীরের জন্য খুবই বিষাক্ত। এবং এটা কিডনি ও লিভার নষ্ট করে দেয়। যেদিন মদ খাওয়া হবে সেদিন কোনো অবস্থাতে ঘুমের ওষুধ খাওয়া যাবে না। কেননা মদ ও ঘুমের ওষুধে কার্ডিয়াক এরেস্ট হয়, এবং মারা যান।
গত ১০ বছরে মদ বিক্রির লাইসেন্স ৪৯ ভাগ বাড়লেও বাড়েনি তদারকি। এছাড়া মদ পানের জন্য লাইসেন্স থাকার আইন থাকলেও বাস্তবায়ন না থাকায় মৃত্যু বাড়ছে বলে জানান অধ্যাপক আ ব ম ফারুক। তিনি বলেন, মদে কি মিথাইল ক্যাকোহল দেয় না তার থেকেও বিষাক্ত কিছু দেয়; বুঝার তো উপায় নেই। এজন্য ভোক্তার জন্য সবচেয়ে ভালো হলে মদ না খাওয়া। এছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরে রাসায়নিক বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ দেয়ারও পরার্মশও বিশেষজ্ঞদের।
আমাদের ফেইসবুক Link : ট্রাস্টনিউজ২৪