দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রাণীরবন্দর দারুল ইসলাম কংগ্রেস মাদ্রাসার সুপার মার্কেট রাণীরবন্দর বাজারের উপর কোটি কোটি টাকার নিজস্ব সম্পত্তিতে দোকান বরাদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। পুরনো টিনসেটের দোকানঘর ভেঙ্গে নতুন বিল্ডিং ঘর নির্মান করে দোকান বরাদ্ধে চলছে টাকার ছড়াছড়ি।
টিনসেটে থাকা পুরনো দোকান মালিকদের অগ্রধিকার না দিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে স্বজনপ্রীতি নতুন দোকান ঘর মালিককে খুঁজতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ম্যানিজিং কমিটি। আর এই কারনে আগের ১৩ জন দোকান মালিক ও প্রায় ২৫টি পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। নতুন বিল্ডিং এ দোকান না পেলে তারা বেকার হয়ে যাবে এই দুচিন্তায় দিন কাটাচ্ছে। নাম বলতে অনিচ্ছুক কয়েকজন দোকান মালিক জানায়, মাদ্রাসার সম্পত্তি সরকারি সম্পত্তি দোকান বরাদ্ধ নিতে এখানে এত বিপুল পরিমান অর্থের প্রয়োজন হয় যে অন্য কোথাও এত টাকা লাগেনা। পুরোনো দোকান মালিকরা প্রায় ৪০ থেকে ৮০ হাজার টাকা জামানতে এখানে ২০ বছর সময়ের বেশী সময় ধরে আছে। কিন্তু বর্তমানে এখানে ডাকের মাধ্যমে দোকান বরাদ্ধে সুভংকরের ফাঁকির মত একটি ফরমও তৈরী করা হয়েছে। যার শর্তাবলী পূরন করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে গেছে ।
জানাগেছে, প্রস্থ ১০ ফিট ও লম্বা ১৫ ফিটের মধ্যে নতুন বিল্ডিং ১৯টি দোকান ঘরে প্রতিটি দোকান ঘর বাবদ জামানত হিসাবে ডাকের মাধ্যমে প্রাথমিক টাকার পরিমান ৫ লক্ষ টাকা করে লাগতে পারে আলোচনায় এসেছে। এতে সেখানকার পুরোনো দোকান মালিকরা দুচিন্তায় পড়েছে। এছাড়া এই মাদ্রাসার মার্কেটের দোকান ঘর মোটা অংকের টাকায় ডাকের মাধ্যমে নির্ধারণ হলেও তা পরে স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় গোপনে ধার্নট্য ব্যাক্তিদের কম টাকায় দেয়ায় অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে একই ব্যাক্তি একই পদে বহাল, ম্যানিজিং কমিটির আয় ব্যায়ের হিসাবের কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে বেপড়য়া হয়ে উঠেছে ম্যানিজিং কমিটির সদস্যরা। অর্ধশতাধিক বিল্ডিং দোকান ভাড়া ও বরাদ্ধে নানা স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসছে। তারা আরো জানায়, মাদ্রাসার উন্নয়নে ভাড়ার টাকা বেশী না নিয়ে শুধু এখানে জামানত (ফেরত যোগ্য) টাকা বেশী নেয়া হয়। এই বিপুল পরিমান জামানতের টাকা কোথায় যায় ? যা আমাদের কারো জানা নেই।
আর এই সুযোগের কারনে নিজেদের আখের গোছাতে প্রভাবশালী স্থানীয় কর্তাব্যক্তিরায় মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে। এই মাদ্রাসাটিতে কমিটির হাতে ক্ষমতা থাকায় ক্ষমতার অপব্যবহারও দেখা গেছে ব্যাপক মাত্রায়। ম্যানিজিং কমিটির হর্তাকর্তাদের যোগসাজাসে এমন অনিয়ম অনেকদিন ধরেই চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। উল্লেখ্য ২৮ এপ্রিল ২০১৯শে এই মাদ্রাসা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক টাকা দিতে না পারায় মানসিক চাপে ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্বাস আলী (৪৭) ব্রেইন স্টোক করে মৃত্যুবরণ করারোও অভিযোগ রয়েছে। তবে সেই সময়ে চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনওকে মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করে পুরোনা কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষনার দাবী জানিয়েছিলো স্থানীয় এলাকাবাসী।
এছাড়া মাদ্রাসার এসব নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা,ক্ষোভ থাকলেও দোকান ঘর ভাড়াটিয়া তথা পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা প্রভাবশালী হবার কারনে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। স্থানীয় প্রায় প্রতিটি দোকানে এসব নিয়ে আলোচনা আছে। সাধারন মানুষের প্রশ্ন- মাদ্রাসার উন্নয়নে কাজ করতে আসা ম্যানেজিং কমিটির লোকেরাই যদি এমন সুযোগ নেয়, প্রতিষ্ঠানের মঙ্গল করবে কে? এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা সিদ্দীকা জানান, পুরোনো দোকান মালিকদের অব্যশই মাদ্রাসা কমিটিকে অগ্রধিকার আগে দিতে হবে। তাছাড় াউপজেলা প্রশাসন বরাবর দোকান মালিকরা লিখিত অভিযোগ দাখিল করলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।