দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার বি-আমতলী স্বরসতীপুর সীমান্তে অভিযান চালানোর সময় দুই র্যাব সদস্যকে আটক করে নিয়ে গেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এই ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফ’র কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) দুপুর আড়ইাটার টার দিকে ওই সীমান্তের মেইন পিলার ৩০৭, সাব পিলার-১ এর কাছ থেকে তাদেরকে আটক করে নিয়ে যায় বিএসএফ। আটককৃতরা হলেন- র্যাব-১৩ দিনাজপুর সিপিসি-১ এর সহ-অধিনায়ক (এএসপি) শ্যামল চং ও কনস্টেবল আবু বক্কর সিদ্দিক। স্থানীয়রা জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বি-আমতলী স্বরসতীপুর সীমান্তের মন্ডলপাড়া এলাকায় ৫ জন র্যাব সদস্য দুই দলে বিভক্ত হয়ে মাদকের বিরুদ্ধে মোটর সাইকেল যোগে সিভিল পোশাকে অভিযানে য়ায়। একটি দল দু’জন এবং অপর একটি দল তিন জন র্যাব সদস্য ভিন্নভাবে অভিযান শুরু করে। কিন্তু, অজ্ঞতাবশত তাদের অজান্তে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে তারা।
সেখানে ৩ জন র্যাব সদস্য ভারতীয় নাগরিক ইসরাফিলের ছেলে মিলনকে আটক করে । এ সময় সে চিৎকার শুরু করলে মোশাররফ মাস্টার ও হিরোসহ কয়েকজন মিলে মিলনকে ছিনিয়ে নিয়ে র্যাব সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় সেখানে থাকা ৩ জন র্যাব সদস্য নিজেদের নিরাপত্তার জন্য এক রাউন্ড গুলি করে কৌশলে পালিয়ে আসে। গুলির শব্দ শুনে অপর প্রান্তে থাকা দু’জন র্যাব সদস্য তাদের সাথীদের উদ্ধারে এগিয়ে যায়। ততক্ষণে ঘটনাস্থলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ সদস্যরা হাজির হলে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় ওই দুই র্যাব সদস্যকে আটক করে তাদের ভারতীয় সমজিয়া ক্যাম্পে নিয়ে যায়। এই ঘটনার পর সন্ধ্যার দিকে বিজিবি পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফ’র কাছে পত্র পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।
চিরিরবন্দর উপজেলার ১০ নং পুনট্টি ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) আব্দুল ওহাব জানান, র্যাব সদস্যরা সেখানে ক্রেতা সেজে মাদকবিরোধী অভিযানে যায়। সেখানে স্বরসতীপুর ভারতীয় অংশে মাদক ব্যবসায়ী মিলনকে হাতকড়া পড়ালে চিৎকার করে। এ সময় এক রাউন্ড গুলি করে র্যাব সদস্যরা পালিয়ে আসে। কিন্তু, একই অভিযানে অন্য স্থানে থাকা দু’জন র্যাব সদস্য সেখানে গেলে তাদেরকে আটক করে বিএসএফ’র কাছে হস্তান্তর করে ভারতীয় গ্রামবাসী। ওই এলাকার আরেক ইউপি সদস্য জাহির উদ্দিনও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে ২৯ বিজিবি’র অধিনায়ক শরিফ উল্লাহ আবেদের মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। অপরদিকে র্যাব-১৩ দিনাজপুর সিপিসি-১ ক্যাম্পের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মামুনের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনিও রিসিভ করেননি। ঘটনার সংবাদ সংগ্রহের জন্য ওই এলাকায় যাওয়া হলেও ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি বিজিবি। এ সময় বিজিবি’র বি-আমতলী ক্যাম্পের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাওয়া হলে অনুমতি নেই বলে ক্যাম্পেও প্রবেশ করতে দেয়নি বিজিবি’র দায়িত্বরত সদস্যরা।