নরমাল ডেলিভারি হলেও চুক্তিকৃত টাকা আদায় করতেই ঝিনাইদহে এক প্রসূতির সিজার করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কোনো অ্যানেসথেশিয়া ডাক্তার ছাড়াই মাত্র একজন চিকিৎসক ও দুজন নার্স মিলে করা হয় অপারেশন। সিজারে বাধা দেওয়ায় ওই প্রসূতিকে মারধরের পর ইনজেকশন দিয়ে করা হয় অজ্ঞান। বিষয়টি তদন্ত করে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অশ্বাস দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
‘সেবা নয়, বাণিজ্যই মুখ্য’ বেসরকারি হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের এমন অভিযোগ থাকলেও প্রকাশ্যেই করে দেখিয়েছে ঝিনাইদহের একটি প্রাইভেট হাসপাতাল। গত ১৫ ডিসেম্বর রাতে প্রসব বেদনা নিয়ে ঝিনাইদহে কালীগঞ্জের দারুস শেফা প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন রাণী খাতুন। এ সময় তার স্বজনদের সঙ্গে অপারেশনের জন্য ১২ হাজার টাকায় চুক্তি করা হয়। রাত ১২টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার আগেই ওই প্রসূতি নরমাল ডেলিভারিতে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, সন্তান প্রসবের পরও চিকিৎসক রোকসানা পারভিন ইলোরা অপারেশন করতে চাইলে বাধা দেন প্রসূতি। এ সময় হাসপাতালের ম্যানেজার ওই নারীকে মারধর করে অ্যানেসথেশিয়া দিয়ে অজ্ঞান করেন। পরে দুজন নার্স নিয়ে ওই নারীর পেট কেটে আবার সেলাই করে দেন চিকিৎসক। মূলত চুক্তিকৃত টাকা আদায় করতেই অহেতুক সিজার করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের।
ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, স্বাভাবিকভাবে আমার বাচ্চাটা হয়। ম্যানেজার আমাকে দুই তিনটি চড় মারে, আর বলে এতো চিৎকার করছো কেন। তারপর ইনজেকশন দিয়ে আমাকে অজ্ঞান করেছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে সময় সংবাদ ওই হাসপাতালে গেলে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে ওই ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য চিঠি দিয়েছি, তদন্ত করা হচ্ছে, রিপোর্ট পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঝিনাইদহ-৭ এর সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে যে পদক্ষেপ নিলে মানুষ যেন স্বস্তি পায় সেটা করা হবে। তিনি বলেন, কেউ যেন না ঠকে, কেউ যেন প্রতারণার শিকার না হয় বা কষ্টের শিকার না নয় সে ব্যাপারে অবশ্যই পদক্ষেপ নেব। প্রসূতি রানী খাতুন জেলা সদরের কয়ারগাছী এলাকার আলামিনের হোসেন স্ত্রী।
আমাদের ফেইসবুক Link: https://bit.ly/3qauGA0