বাংলাদেশ ধ্বংস করার জন্য বিদেশিদের ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, আমরা শক্ত অবস্থানে আছি এবং দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র এখানে কাজ হবে না।
বুধবার (১৬ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যেখানে অভ্যন্তরীণ সংঘাত থাকে ষড়যন্ত্র সেখানে কাজে লাগে। বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ সংঘাত খুব কম। সুতরাং এখানে কিছু হবে না। আমরা দেশটা ধ্বংস করতে চাই না। দেশ ধ্বংস হোক সেটা বিএনপি চাইবে না।
বিএনপি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আসবে বলে বিশ্বাস করেন জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, বিএনপি তাদের অতীতের ভুল বুঝতে পারবে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি এক সিটের জন্য দুই থেকে তিনজন প্রার্থী দিয়েছে। এবার তারা তাদের ভুল বুঝবে। প্রতি সিটে একজন প্রার্থী দেবে। তাহলে তাদের অবস্থান আরও ভালো হবে। গণতন্ত্রে বিশ্বাস রাখলে তারা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে। এবারের সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছ ও সুন্দর হবে বলেও জানান তিনি।
ভারতের হিন্দুস্থান টাইমসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বড় দুই রাজনৈতিক দলের বিপরীতমুখি অবস্থানের কারণে সামরিক শাসন উত্থানে আশঙ্কা করা হয়। এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, গ্রাউন্ড রিয়ালিটি হচ্ছে, বিএনপি বড় বড় মিটিং করে। শুনেছি, ওরা টাকা দেয়; লোক আসে।
ব্রিকসে বাংলাদেশের সদস্য পদ প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, এবার সদস্য না হলেও বিষয়টি আলোচনা হবে। আগামী ২১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকা যাবেন।
ব্রিকসের সাইডলাইনে ভারতের সঙ্গে সরকারপ্রধানের কোনো বৈঠক হবে কিনা জানতে চাইলে ড. মোমেন জানান, দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
রোহিঙ্গা দায় বাংলাদেশের ওপর চাপাতে চায় পশ্চিমা বিশ্ব- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ইস্যুতে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়ার পরিবর্তে বাংলাদেশের ওপর দায় চাপাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। পশ্চিমা বিশ্বে শরণার্থী হিসেবে যারা যায় তারা ওই দেশে থেকে যায়। সেখানে প্রত্যাবাসনের দৃষ্টান্ত নেই। তাই পশ্চিমা দেশগুলোর ধারণা, আসছে যখন এখানে এবজর্ব করবে। মার্কিন দুই কংগ্রেসম্যানও বাংলাদেশ সফরে এসে রোহিঙ্গাদের কাজের প্রশিক্ষণ দিয়ে রেখে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা জানিয়েছি, আমরা ঘনবসতি দেশ। প্রতি বছর এখানে ২০ লাখ নতুন মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য যুক্ত হয়। আপনারা তাদের নিয়ে যান।
মন্ত্রী বলেন, দুই কংগ্রেসম্যানকে বলেছি, রোহিঙ্গারা চায়, তারা নিজের দেশে ফিরে যাবে। মিয়ানমারও আমাদের শত্রু নয়, প্রতিবেশী দেশ। সেখানে সমস্যা ছিল। আমরা চেষ্টা করছি প্রত্যাবাসনে। আপনারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এ ব্যাপারে সরব হোন।
আগামী ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের এ দেশে আসার দুই বছর হবে। এর আগে স্বল্প আকারে পাইলট প্রত্যাবাসনের উদ্যোগের বাস্তবায়ন হবে কিনা জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, দু’বার তারিখ দিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। তাই এ নিয়ে বলতে পারব না।