সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের ন্যায় মালয়েশিয়ায়ও বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। তবে সবচেয়ে বড় উৎসব হলেও বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ বিধি নিষেধ এর কারণে এ বছরও স্থানীয়রাসহ কয়েক লাখ বাংলাদেশির ঈদ আনন্দে পড়েছে ভাটা। বলা চলে অনেকটা নিরানন্দের অন্যরকম এক ঈদ। লকডাউনের কবলে পড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ এই ঈদ উৎসবে ছিলো না যেমন কেনা- কাটার তোড়জোড় তেমনি কারো মাঝে নেই কোনো উৎসবেরও আমেজ।
ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে আটটায় জাতীয় মসজিদ ‘মসজিদ নেগারায়’ স্বল্প সংখ্যক মুসুল্লির অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়। ঈদ জামাতে মহামারী করোনা থেকে মুক্তি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে এ বছরও শুরু থেকে স্বল্প পরিসরে (২০ জন) মসজিদ গুলোতে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ফলে এ বছরও নিজ নিজ গৃহেই ঈদের নামাজ আদায় করতে হয় সকলকে। এমন অবস্থার মধ্যে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরাও।
প্রতিবছর মসজিদ গুলোতে স্থানীয়দের পাশাপাশি বিদেশি শত শত মুসল্লির উপস্থিতিতে এবং অনুমতি নিয়ে খোলা ময়দানে মালয়েশিয়ায় ঈদের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত গুলো অনুষ্ঠিত হতো বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকায়।
গত বছরের দুটি ঈদেও খুশি বা আনন্দ’র একটুও রেশ লাগেনি মালয়েশিয়া প্রবাসী কয়েক লাখ বাংলাদেশির মনে। কখনো কড়াকড়ি আবার কখনো শিথিল এমন টানা লকডাউনের যাঁতাকলে পড়ে প্রায় ১ বছরের উপরে কাটাচ্ছে দেশটি। এমন পরিস্থিতিতে পড়ে প্রবাসীদের মনে এবারও তাই নেই কোনো ঈদ আনন্দ, ছিল না কোন তেমন ঈদের প্রস্তুতিও।
প্রথম দফায় দেশটির উলাইয়া পারসেকেতুয়ান প্রদেশে ৭ মে থেকে ২০ মে এবং সেলংগর প্রদেশের ৬টি দেরায় ৬ মে থেকে ১৭ মে পর্যন্ত মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (এমসিও) বা লকডাউন ঘোষণা করলেও দেশটিতে পরে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হওয়ায় সোমবার বিকেলে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী তান শ্রী মহিউদ্দিন ইয়াসিন ১২ মে থেকে ৭ জুন পর্যন্ত সমগ্র দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বর্তমান সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লকডাউনের মধ্যে অর্থনীতি সচল রাখতে অর্থনৈতিক ও উৎপাদন খাতগুলো যথারীতি খোলা থাকছে। আন্তঃজেলায় যাতায়াত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রমজানের বাজার, রেস্টুরেন্ট ও সভা সমাবেশ বন্ধ থাকবে। শর্তসাপেক্ষে বিয়ের অনুষ্ঠান, ঈদের নামাজ, মসজিদ ও উপাসনালয়গুলো বেঁধে দেওয়া সীমিত সংখ্যকের উপস্থিতিতে পরিচালিত হবে। অফিস ও প্রাইভেট সেক্টরে ৩০ শতাংশ স্টাফ কাজ করতে পারবে বাকিরা বাসায় থেকে অফিসের কাজ করতে হবে।
এদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটিকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের রাষ্ট্রদূত গোলাম সরোয়ার। মালয়েশিয়ায় চলমান লকডাউন এর আইন-কানুন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিনি সকলকে ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানান। এছাড়াও বাংলাদেশ প্রেসক্লাব অব মালয়েশিয়া নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, কমিউনিটির অন্যান্য আঞ্চলিক সংগঠন ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃন্দ প্রবাসী বাংলাদেশিদের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
আমাদের ফেইসবুক Link : ট্রাস্টনিউজ২৪