ইয়েমেনের রাজধানী সানায় আবারও বিমান হামলা শুরু করেছে সৌদি-আমিরাত জোট। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান বিমানবন্দর এডেনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা পর নতুন করে এ হামলা চালানো হয়। এডেনে বিস্ফোরণে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। হাউথিদের পরিচালিত গণমাধ্যম আল মাসিরাহ টিভি জানায়, সানার দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকার বনি হাশিশ জেলার ওয়াদি রজম, সানহান জেলার রাইমা হামিদে হাউথিদের দুটি অবস্থান এবং সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাতভর বিমান হামলা চালায় জোট বাহিনী।
হামলায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহত হয়েছে এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। সানা থেকে আল জাজিরার মোহাম্মদ আল আত্তাব জানান, রাতভর আটবারের বেশি বিমান হামলা চালানো হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এডেন বিমানবন্দরে বর্বর হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় ইয়েমেনের নতুন ঐক্যের মন্ত্রিসভার সদস্যদের বহনকারী বিমান, বন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গে ওই হামলা চালানো হয়।
বিমানবন্দরের হামলা থেকে বেঁচে যাওয়ার পর মন্ত্রিসভার সদস্যরাসহ ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী মাঈন আবদুল মালিক এবং ইয়েমেনে সৌদি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সাঈদ আল জাবেরকে নিরাপদে মাশেক প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসেসরিয়ে নেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দা এবং গণমাধ্যম জানায়, এডেনে হামলার কয়েক ঘণ্টা পর সেখানেও বিস্ফোরণ ঘটে। হামলায় রেড ক্রসের (আইসিআরসি) দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। আইসিআরসি এক বিবৃতিতে জানায়, তাদের আরেক কর্মী নিখোঁজ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবদুল মালিক বলেন, মন্ত্রিসভার সব সদস্য নিরাপদে আছে। হামলাকে বিশ্বাসঘাতকতা এবং কাপুরুষিত বলে নিন্দা জানান তিনি। কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি।
ইরান সমর্থিত হাউথি বিদ্রোহীরা হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পরে জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে হামলার চেষ্টাকালে বিস্ফোরক ভর্তি হাউথিদের একটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃত প্রেসিডেন্ট আবদে রাব্বু মানসুর হাদির সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত সমর্থিত সাউথার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল বা এসটিসি’র মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার লক্ষে রিয়াদের মধ্যস্থতায় নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান দুটি গোষ্ঠী হলো এসটিসি এবং প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদির দল। সৌদি জোটের সহায়তায় উত্তরাঞ্চল এবং রাজধানী সানা পুনরুদ্ধারের জন্য হাউথিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তারা। আমিরাত সমর্থিত এসটিসি এবং হাদি বাহিনীর মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এডেনে সংঘাত অব্যাহত ছিল।
দক্ষিণ ইয়েমেন নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করতে চায় এসটিসি। এপ্রিলে ওই অঞ্চলে নিজেদের শাসন ব্যবস্থা ঘোষণা করে তারা। যার কারণে ইয়েমেনে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির লক্ষে জাতিসংঘের উদ্যোগ স্থবির হয়ে পড়ে। হাদি সরকার এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে মধ্যস্থতার জন্য এক বছরের বেশি সময় ধরে চেষ্টা করছিল সৌদি জোট। সবশেষ চলতি মাসে সবার অংশগ্রহণে নতুন মন্ত্রিসভাব গঠনের ঘোষণা দেয় সৌদি-আমিরাত নেতৃত্বাধীন জোট।
আমাদের ফেইসবুক Link: ট্রাস্টনিউজ২৪