শ্বাসরুদ্ধ করে নিজের ১ বছর ৫ মাস বয়সী মেয়েকে হত্যার পর পুলিশর কাছে আত্মসমর্পন করেছেন নাজমিন আক্তার (২৮) নামের এক নারী।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনার ছবি ও সংবাদ সংগ্রহে সাংবাদিকতা কতোয়ালি থানায় গেলে তাদের দিকে তেড়ে যান নাজিমন আক্তার।
নাজমিন নগরের স্কলার্স হোম স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষিকা। পারিবাহিক কলহের জেরে সাবিহাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেন নিজের মায়েকে ।
থানায় গণমাধ্যম কর্মীরা তার ছবি তুলতে গেলে নাজমিন রেগে গিয়ো বলেন, ‘মজা লাগতেছে, আমার মেয়ে মারা গেছে আপনাদের মজা লাগতেছে। যান প্রত্যেকটা ব্যক্তি গিয়ে নিজের মেয়েকে খুন করে আসেন । বলছি ক্যামেরা অফ করেন।’
বুধবার সকালে সিলেট নগরের শাহপরাণ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানায় পুলিশ।
থানায় গিয়ে নাজমিন বলেন, আমি আমার মেয়েকে হত্যা করেছি, আমার ফাঁসি হোক’- থানায় বসে এমনটি বলছিলেন নাজমিন জাহান (২৮)।
নাজমিন বলেন , ‘স্বামীর সাথে বিরোধের কারনেই মেয়েকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেছি’।
এ ঘটনায় নাজমিনের স্বামী সাব্বির হোসেনকেও আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার গোলাপগঞ্জ এলাকার নাজমিনের সাথে দক্ষিণ সুরমার বদলি এলাকার সাব্বির হোসেনের বিয়ে হয় ২০১৫ সালে। বিয়ের পর থেকে তারা শাহপরান এলাকায় থাকেন। নাজমিন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্কলার্সহোম স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষিকা ও তার স্বামী কাতার প্রবাসী।
এর আগেও একটি বিয়ে হয়েছিলো নাজনিনের। সেই সংসারে তার একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
নাজমিন জানায়, বিয়ের পর আমার স্বামী বিদেশ চলে যায়। এরপর ৪ বছর পর দেশে ফিরে। কিন্তু বিদেশ থাকা অবস্থায় তিনি আমার ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেননি। দেশে ফিরে আমাকে অনেক বুঝিয়ে আবার সংসার শুরু করেন তিনি। তখন আমি গর্ভবতী হই। আমাকে গর্ভবতী রেখেই তিনি আবার কাতার চলে যান।
নাজমিন অভিযো্গ করে বলেন, বিদেশে গিয়ে সাব্বির অভিযোগ করেন আমার গর্ভের সন্তান তার নয়। আমি তখন ডিএনএ টেস্ট করার কথা বলি। কিন্তু সাব্বির ও তার তার পরিবার আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে থাকে।
মেয়ের চেহেরা অবিকল তার বাবার মতো হয়েছে জানিয়ে নাজমিন বলেন, সাব্বির ১৫ দিন আগে দেশে এসেছেন। কিন্তু একবারও মেয়েকে দেখতে আসেননি।
স্বামীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ এনে তিনি বলেন, আমার মেয়ে বড় হয়ে চরিত্রহীন পিতার সন্তান- এমন পরিচয় যাতে না দিতে হয়, তাই নিজের বিবেচনায় আমি নিজের সন্তান সাবিহাকে হত্যা করেছি।
নিজের মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করে নাজমিন আরও বলেন, আমি কাউকে ফাঁসাবো না। সাব্বিরকেও ফাঁসাবো না। তাকে ফাঁসালেও সে কম শাস্তিতে পার পেয়ে যাবে। তার বিচার আল্লাহ করবেন। আমি আমার মেয়েকে খুন করছি। আমার ফাঁসি হোক।
ক্ষোভ প্রকাশ করে নাজমিন বলেন, হাসপাতালে সাব্বিরের ভাইকে পাইছিলাম। তাকে জুতা দিয়ে মারতে চাইছিলাম। মারতে পারলে শান্তি হতো। কিন্তু পারিনি।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, পারিবাহিক কলহের জেরে সাবিহাকে গলা টিপে তার মা নাজমিন হত্যা র ঘটনায় নাজমিনকে আমরা থানায় নিয়ে এসেছি। তার স্বামীকেও আটক করেছি। ঘটনাটি যেহেতু শাহপরান থানা এলাকার তাই শাহপরান থানা পুলিশকে খবর দিয়েছি। তারাই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আমাদের ফেইসবুক Link : ট্রাস্ট নিউজ ২৪