এবার দিনাজপুর জেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া বাজার মূল্যেও খুশি পাটচাষীরা। দিনাজপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাট চাষও বেশী হয়েছে। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে পানির অভাবে পাট জাগ দিতে অসুবিধায় পড়েন চাষীরা। তবে এ অবস্থা কেটে গিয়ে ক্ষেতের উৎপাদিত পাট কেটে জাগ দেওয়া, আঁশ ছড়ানোর কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। বাজার মূল্য বেশী এবং উৎপাদন ভালো হওয়ায় আগামীতে এ অঞ্চলে পাট চাষ আরও বাড়বে বলে চাষীরা মনে করছেন।
দিনাজপুর জেলা সম্প্রসারণ কৃষি অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছর জেলায় ৪ হাজার ১৩৬ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে পাট চাষ হয়েছে ৪ হাজার ১৩৬ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের তুলনায় বেশি। এছাড়া চলতি মৌসুমে চাষীকে বীজ ও সার প্রণোদনা দেয়া হয়। কয়েকজন পাটচাষী বলেন, এ বছর আমরা পাটের খুব ভালো ফলন পেয়েছি। পাটের বাজার মূল্যও পাচ্ছি কল্পনাতীত। পাট যে সোনালী আঁশ বাজার মূল্যেই তার প্রমাণ।
বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা পরিবারের সকলে মিলে আনন্দের সাথে ক্ষেতের উৎপাদিত পাট কেটে জাঁক দেওয়া, আঁশ ছড়ানো, পাট ও পাটকাঠি শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকে ইতোমধ্যে পাট বিক্রি করে ভালো দাম পেয়ে লাভবান হয়েছেন।
খানসামার আইয়ুব আলী বলেন, জীবনদ্দশায় আমি পাটের ফলন আর এমন বাজার দর দেখিনি। পাটের এ বাজার থাকলে আগামি বছর চাষিরা আগ্রহের সাথে অধিক হারে পাট চাষ করবে।
অপর পাটচাষী আব্দুস সালাম বলেন, প্রতিবিঘা (৫০ শতক) জমিতে হালচাষ, বীজ, নিরানী, সার, বিষ প্রয়োগ পাট কাটা ও ধোঁয়া শুকানোসহ খরচ হচ্ছে ২১ থেকে ২২ হাজার টাকা। প্রতিবিঘা জমিতে পাট হচ্ছে ১৬ থেকে ১৮ মণ। প্রতি মণ ভালো পাটের বর্তমান বাজার মূল্য আড়াই হাজর থেকে ২ হাজার ৮শ টাকা পর্যন্ত। আর এক বিঘা জমির পাট বিক্রি হচ্ছে ৪৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা। এতে লাভ দাড়া ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। সাথে পাটকাটি বিক্রি করে আসবে ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা।
দিনাজপুর জেলা সম্প্রসারণ কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ জানান, এ বছর পাটের জন্য আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। ফলে পাটের যেমন চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি ফলনও বাম্পার হয়েছে। এবার জেলায় ৯ হাজার ২৫৫ মেট্রিক টন পাটের ফলন পাওয়া গেছে। তাছাড়া এবার পাটের ভালো বাজার মূল্য পাচ্ছেন চাষিরা। এ কারণে আগামী মৌসুমে পাট চাষে আরও আগ্রহী হচ্ছেন চাষীরা।
আমাদের ফেইসবুক Link : ট্রাস্টনিউজ২৪