
কক্সবাজারে দীর্ঘতম রানওয়ে চালু হচ্ছে নভেম্বরে
বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম রানওয়ে নভেম্বরেই চালু হচ্ছে কক্সবাজারে। এ রানওয়ের অনন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অবতরণের সময় উড়োজাহাজটি একেবারে সাগর ছুঁয়ে যাবে। কারণ, ১০ হাজার ৭শ’ ফুট দীর্ঘ রানওয়ের মধ্যে ১৭শ’ ফুট তৈরি হয়েছে সমুদ্রবক্ষে। আর এ রানওয়ে দিয়েই বিশ্বের সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী বিমানটিও কক্সবাজার বিমানবন্দরে নামার সুযোগ পাবে।
একই সঙ্গে কক্সবাজার বিমানবন্দর ঘিরে পাশের দেশগুলোর ‘আঞ্চলিক হাব’ হিসেবে তৈরির জন্য কনসালটেন্ট নিয়োগের পরিকল্পনাও করেছে সরকার। সমুদ্রের বুক ছুঁয়ে নামবে উড়োজাহাজ। এমন দৃশ্য যেমন উপভোগ্য ঠিক তেমনি রোমাঞ্চকর। আকাশ থেকে নামার সময় মনে হতে পারে সাগরেই নামছে উড়োজাহাজ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানায়, ২০২১ সালে কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৬৭৭৫ ফুট থেকে ৯ হাজার ফুট বাড়িয়ে বোয়িং ৭৭৭ বিমান নামার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে শুধুমাত্র ড্যাশ-৮ এবং এটিআর উড়োজাহাজই চলাচল করত এই বিমানবন্দর দিয়ে। ২০২১ সালের পর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক রূপ দিতে ১ হাজার ৯শ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়।
‘‘প্রকল্পের অংশ হিসেবে রানওয়ে বর্ধিত করা, দৃষ্টিনন্দন একটি আন্তর্জাতিক ভবন তৈরি করা; যেখানে কাস্টমস, ইমিগ্রেশন, লাউঞ্জ এবং গাড়ি পার্কিং সুবিধা থাকছে। ভবন থেকে সরাসরি বিমানে ওঠানামার জন্য থাকছে একটি বোর্ডিং ব্রিজ। সবগুলোই তৈরি হয়ে চালু হবে ২০২৪ সালের জুনে। আর কক্সবাজার বিমানবন্দরে দেশের চারটি বিমান সংস্থার যাত্রীবাহী বিমান প্রতিদিনই ওঠানামা করছে।

এদিকে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রকল্প কাজের অগ্রগতি দেখতে বিমানবন্দরের বর্ধিত রানওয়েতে যান প্রধামন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। এসময় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা প্রকল্পের পুরো দিক তুলে ধরেন তার কাছে। এরপর তিনি গাড়িযোগে বিমানবন্দর সংলগ্ন সমিতিপাড়া ও নাজিরারটেক পুরো এলাকা ঘুরে দেখেন।
প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নভেম্বর কিংবা ডিসেম্বরে এই রানওয়েটি চালু করতে পারবেন।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালানো ক্যাপ্টেনরা জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি, মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা ও বালি বিমানবন্দরে অবতরণের সময় যাত্রীরা যে রোমাঞ্চকর অনুভূতি পান কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণের সময়ও তেমন অনুভূতি পাবেন। ফলে কক্সবাজারমুখী পর্যটকরা আকৃষ্ট হবেন অনেক বেশি।
দেশের দীর্ঘতম রানওয়েটি নির্মাণশৈলীর কারণে এরইমধ্যে এসেছে আলোচনায়। আর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমান বন্দর হিসেবে কক্সবাজার বিমান বন্দরকে গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বেবিচক চেয়ারম্যান।

বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, ‘অক্টোবরে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে অর্থনীতির চাপ এসেছিল ফরেন কারেন্সিতে। এলসি খুলতে পারিনি। এর জন্য কিছু আইটেম ক্রয় করে আনতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আশা করি, নভেম্বরের মধ্যে বর্ধিত রানওয়ে চালু হবে। দেশের সবচেয়ে বড় রানওয়ে সম্পন্ন বিমানবন্দরটি নির্মাণে খরচ ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ রুটের জন্য প্রস্তুত হলেও, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হতে লাগবে আরও সময়। তারপরও আশা করি, আগামী ২০২৪ সালের জুনের আগেই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু ও দিবারাত্রি ফ্লাইট ওঠানামার কার্যক্রম শুরু হবে।’