দিনাজপুরে অধিগ্রহণকৃত অব্যবহৃত জমি মূল মালিকগণের ওয়ারিশদের নিকট বরাদ্দ না দিয়ে অধিক টাকা নিয়ে দূনীতির মাধ্যমে প্লট বরাদ্দ দিচ্ছে বলে দাবী করছে ক্ষতিগস্থ পরিবারের সদস্যরা। রবিবার (১৬ জানুয়ারী) সকাল সাড়ে ৯ টায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ দিনাজপুর ডিভিশন কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসুচী পালন শেষে দিনাজপুর জাতীয় গৃহায়নের সামনে অবস্থান নেয় গৃহহারাক্ষতিগস্থ পরিবারের সদস্যরা। তারা জানান, আমারা প্লট বরাদ্দের হকদার, আমরা উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে এসেছি, তাতে স্পষ্ট ভাষায় বলা রয়েছে প্লট বরাদ্দের সকল কাযৃক্রম স্থগিত করা হয়েছে। ক্ষমতার অপব্যাপহার করে তারা আজ কাজ শুরু করেছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে একের পর এক সুষ্ঠ কর্মসুচী দিয়ে আসছি, আমাদের পক্ষে কথা বলার লোকও কম।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে তারা পৈত্রিক সম্পত্তিতে বসবাস করছেন। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা করেই ওই জমিগুলোই এখন লটারির মাধ্যমে প্লট আকারে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। এতে করে পূর্বপুরুষদের ওয়ারিশগন গৃহহীন হয়ে পড়বেন। সরকার যেখানে গৃহহীনদের জন্য বাড়ী উপহার দিচ্ছেন সেখানে এই এলাকার বসবাসকারীদের গৃহহীন করার পায়তারা চলছে। গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্লট বরাদ্দে এক প্রকারে দূর্ণীতির আশ্রয় গ্রহণ করা হয়েছে।
তারা আরো জানান, রিফিউজিদের পূর্ণবাসনের উদ্দেশ্যে ১৯৬০-৬১ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার গৃহায়ন কর্তৃৃপক্ষের আওতায় দিনাজপুর উপশহর এলাকার ৩৬৪ একর জমি জোরপূর্বক হুকুম দখল করেন। ওই সময়ে ওইসব জমিতে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ রিফিউজিদের পূর্ণবাসনের জন্য কোয়ার্টার নির্মাণ করেন। তখন এলাকাবাসী জানতে পারেন যে, সরকার তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি ও বসতবাড়ীর জমি হুকুম দখল করেছেন। এরপরে তারা জায়গাগুলো অবমুক্ত (ডি-রিকুইজিশন) করার জন্য বারবার আবেদন করেন।
এরই মধ্যে ২০১৮ সালে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ৬১টি প্লট বরাদ্দের জন্য আবেদন গ্রহন করে। সেই আবেদনগুলোর লটারীর তারিখ নির্ধারন করা হয় রোববার ১৬ জানুয়ারী ২০২২। এই বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থরা ওইসব প্লটগুলো নিজেদের নামে বরাদ্দ দেয়ার আবেদন করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের প্লটগুলো বরাদ্দ দেয়নি।
নির্ধারিত দিনেই লটারী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দিনাজপুরে আসেন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের উপ-সচিব মাহমুদুল্লাহ ও মোহাম্মদ আশরাফ।
কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ লটারীর কার্যক্রম স্থগিত রাখেন। বিকেল ৩ টার দিকে ওই কর্মকর্তারা গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলেও স্থানীয়রা বাধা প্রদান করে। ফলে তাদেরকে ফেরত যেতে হয়।
এসময় দিনাজপুর গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্লট বরাদ্দের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা জানান এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ দিনাজপুর বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ হিসেবে এলাকাবাসীরা কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেন নাই। অর্থাৎ অধিগ্রহনের সময়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয় সেটি দেখাতে পারেন নাই। তাছাড়া আমরা প্লট বরাদ্দের যে প্রক্রিয়াটি গ্রহণ করেছি সেটি সম্পূর্ণ সরকারী নিয়মেই করেছি।