মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে ভয়াবহ সহিংসতায় অন্তত ১৮ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক দফতর। এ ছাড়াও আহত হয়েছেন আরও অনেকে। নিহতদের সবাই পুলিশের ছোড়া গুলি, গ্রেনেড ও টিয়ার শেলের আঘাতে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিনভর জান্তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় প্রধান শহরগুলো। এদিকে মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশি সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে নিরাপত্তা বাহিনীর নজিরবিহীন দমনপীড়ন ও গণগ্রেফতার গ্রহণযোগ্য নয়।
পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও। রোববারের ঘটনায় সামরিক বাহিনীর প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও। একই সঙ্গে হতাহতের ঘটনার জেরে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানিয়েছে জোটটি। এরই মধ্যে অভ্যুত্থানের জেরে মিয়ানমারে সব ধরনের সহায়তা বন্ধের পাশাপাশি দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে একমত হয়েছেন ইউরোপের দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
সেনা অভ্যুত্থানের ২৮তম দিনে সবচেয়ে ভয়াবহতম সহিংসতা দেখল মিয়ানমারবাসী। শনিবারের ধারাবাহিকতায় রোববারও দেশটির প্রধান শহরগুলোর রাস্তা ছিল উত্তাল। সময় গড়ানোর সাঙ্গে সঙ্গে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ রূপ নেয় সহিংসতায়। সকাল থেকে বিক্ষোভ দমাতে পুলিশ কঠোর অবস্থানে গেলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি ও স্টান গ্রেনেড ছুড়লে, পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়। মুহূর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ইয়াঙ্গুন ও দাওয়েই শহর। একে একে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। সেই সঙ্গে চলে গণগ্রেফতার।
একই পরিস্থিতি আরেক শহর ম্যান্দালেতেও। সাধারণ বিক্ষোভকারীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিলে সেখানেও বাধা দেয় দাঙ্গা পুলিশ। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করেই দিনভর চলে বিক্ষোভ। অন্যদিকে, রাজধানী নেইপিদোতে জান্তা সরকারবিরোধী মোটরর্যালি বের করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় অবিলম্বে দেশটির নেত্রী অং সান সুচির মুক্তির দাবির পাশাপাশি নির্বাচিত সরকারের হাতে ফিরিয়ে দিতে জান্তা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
আমাদের ফেইসবুক Link : ট্রাস্টনিউজ২৪