দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে হাসপাতালের ৬ নাম্বর বেডের বিছানায় ব্যাথার যন্ত্রনায় ছটপট করছে কাজের মেয়ে সাথি (১৩)। মাথায় অসংখ্য আঘাতের চিহৃ, দগদগে ঘাঁ।
শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত বিক্ষত দাগ ও ঘাঁ। কথা বলছে এলোমেলো। দীর্ঘদিন অনাহারে থেকে শরীর হয়েছে হাড্ডি সার। তার মাথার চুল এলোমেলো করে ছোট করে কেটে দেওয়া হয়েছে। আর এ পাশবিক শারিরীক নির্যাতন চালিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন পার্বতীপুর শহরের নতুন বাজার এলাকায় সদরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ওরফে সেলি তার কাজের মেয়ে সাথি (১২) কে। মা মিনা খাতুন মৃত্যুর কোল থেকে তার মেয়েকে উদ্ধার করে গতকাল বুধবার (১৩ জানুয়ারী) বিকেল ৪টার সময় পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। ঘটনাটি ঘটেছে, পার্বতীপুর শহরের পৌর এলাকার সব্জিবাজার এলাকায়।
সাথি সহির উদ্দীনের ২য় মেয়ে।থাকেন পার্বতীপুর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া সুন্দরীপাড়া রেলগেট সংলগ্ন লাইন পট্টি এলাকায়। সদরুল ইসলাম লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের সাবেক ম্যানেজার।হাসপাতালে সাথির মা মিনা খাতুন এ প্রতিবেদককে বলেন- সদরুলের স্ত্রী সেলিনা ওরফে সেলি মেয়েটির উপর লোহার রড, ছুন্নি, লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে সব সময় নির্যাতন চালিয়ে আসতো। মেয়েটিকে ১ বেলা খাবার দিয়ে দূ-বেলা অনাহারে রাখতো।
এমনকি ঘর থেকে বের হতে দিতো না।রাতে শ্যাতশ্যাতে মেঝেতে ঘুমাতে দিত। মিনা খাতুন আরও অভিযোগ করে বলেন- আমি মেয়েটিকে দেখতে গেলে দেখা করতে দিতো না, আর বলত ঘন ঘন দেখতে আসবি না।আমি আমার মেয়ের নির্যাতনের বিচার চাই।আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, সাথি হাসপাতালের বিছানায় ব্যাথার যন্ত্রনায় ছটপট করছে।শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতবিক্ষত দাগ ও ঘাঁ। মাথায় অসংখ্য আঘাতের চিহৃ,দগদগে ঘাঁ।
এলোমেলো কথা বার্তা বলছে। পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আব্দুল্লাহেল মাফী বলেন, সাথি নামে ১৩ বছরের ১ মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তার সুচিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। তার শরীর ও মাথায় অসংখ্যা আঘাতের চিহৃ রয়েছে।পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বাবা বৃদ্ধ, অভাবের সংসার। জমি জমা বাড়ী ভিটা না থাকায় পার্বতীপুর-রংপুর রেলওয়ে লাইনের ধারে টিনের ছাপড়ি করে বসবাস করেন ছহির উদ্দীন (৭০)। সংসারের অভাব দূর করতে দেড় বছর আর্গে মেয়ে সাথিকে নতুন বাজার এলাকায় সদরুল ইসলামের বাড়ীতে কাজ করার জন্য গৃহকর্মী হিসেবে রাখেন।এ ব্যপারে পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মোখলেছুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ থানায় করেননি। অভিযোগ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমাদের ফেইসবুক Link: ট্রাস্টনিউজ২৪