রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় আসামি মজনুর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে মজনুকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। বুধবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার এ রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে, গত ১২ নভেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১৯ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। ১৩ কার্যদিবসে মামলাটির বিচার কার্যক্রম শেষ হচ্ছে। গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে ঢাকার কুর্মিটোলা বাস স্টপেজে নামেন ওই ছাত্রী। পরে ওই ছাত্রীকে মুখ চেপে ধরে সড়কের পাশের ঝোঁপের আড়ালে নিয়ে ধর্ষণ করে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। সে সময় অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন ওই তরুণী। জ্ঞান ফেরার পর তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান চিকিৎসা নিতে। ধর্ষণের ওই ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল হয়ে ওঠে। বিভিন্ন সংগঠনও নানা কর্মসূচি পালন করে।
পরদিন সকালে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে ওই শিক্ষার্থীর বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি উত্তর)। পরে ওই তরুণীর কাছে বর্ণনা শুনে এবং তার কাছ থেকে ধর্ষণকারীর নিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ৮ জানুয়ারি মজনুকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ওই শিক্ষার্থী পরে মজনুকে ‘ধর্ষণকারী’ হিসেবে শনাক্ত করেন। চলতি বছর ৯ জানুয়ারি আসামি মজনুর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ১৬ জানুয়ারি মজনু আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। ওই স্বীকারোক্তি তথ্য ভিত্তিতে ভিকটিমের ব্যাগ, মোবাইল ও পাওয়ার ব্যাংক এবং ভিকটিমের ব্যবহৃত একটি জিন্সের প্যান্ট ও একটি জ্যাকেট উদ্ধার করা হয়।
পরে ১৬ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে মজনুর বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ২৬ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার ভার্চুয়াল আদালতে মজনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।