করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে বেশ আশাবাদী হয়ে উঠছে সংশ্লিষ্টরা। মার্কিন ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মর্ডানাকে নিয়ে এবার আশার কথা শোনালো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটির প্রধান জানান, মর্ডানা কোভিড-১৯-এর টিকা প্রায় ৯৫ শতাংশ কার্যকর হওয়ার যে দাবি করেছে তা সত্যিই উৎসাহের। যদিও বিশ্লেষকরাও বলছেন, চূড়ান্ত কার্যকারিতা নিরূপণের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে আরও কিছু সময় দেয়া প্রয়োজন। এদিকে, বিশ্বব্যাপী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে সতর্ক করেছে সংস্থাটি। করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে অগ্রগতির কথা শোনালেও এখনো বড় ধরনের সাফল্য দেখাতে পারেনি কোনো দেশ। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মর্ডানা দাবি করেছে, তাদের তৈরি টিকা ৯৪ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর। মর্ডানা বলছে, যাদেরকে টিকা দেওয়া হয়েছিল তাদের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এ বছরই যুক্তরাষ্ট্রে ২ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদনের আশা করছে মর্ডানা।
তাছাড়া, কোম্পানিটি এরই মধ্যে কয়েক লাখ ডোজ টিকা তৈরিও করে ফেলেছে। এর আগে আরেক মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফাইজারও তাদের টিকা ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকরের কথা জানায়। মর্ডানার এ সাফল্যে আশার আলো দেখছে খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সোমবার (১৬ নভেম্বর) রাতে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি এ কথা জানায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক কর্মকর্তা বলেন, ভ্যাকসিনের সাফল্য আমাদের উৎসাহ যোগাচ্ছে এই মহামারি কাটিয়ে উঠতে। তবে আমাদের আরও কিছু তথ্যের প্রয়োজন। মর্ডানা আশা করছি সে ধাপগুলো উৎরে যেতে পারবে।
আর বিশ্লেষকরা বলছেন, এখনই তৃপ্তির ঢেকুর না তুলে আরও কিছু দিন অপেক্ষা করা উচিত। কোনো একটি টিকা ৯০ শতাংশের মতো কার্যকর হলেই তাকে গ্রহণযোগ্য বলা যায়। মডার্না তার চেয়েও ভালো অবস্থানে আছে। তবে বিশ্বব্যাপী যেহেতু মহামারি, তাই আমাদের পদক্ষেপও হতে হবে সাবধানী। চূড়ান্ত কার্যকর হয় কিনা, পাশ্বপ্রতিক্রিয়া আদৌ হয় কিনা, তা নির্ণয়ে আরও কিছু কিছু সময় দেয়া দরকার প্রতিষ্ঠানটিকে।
বেশ কয়েকটি দেশ টিকা উৎপাদনে তাদের কার্যক্রম জারি রেখেছে। তবে ফাইজার ও মর্ডানা বর্তমানে সবচেয়ে এগিয়ে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ডের যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনার ভ্যাকসিনও আশার আলো দেখাচ্ছে। টিকা নিয়ে কিছুটা আশার আলো দেখা গেলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত বিশ্ব। যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিনই দেড় লাখের কম-বেশি শনাক্ত হচ্ছেন। ব্রাজিলেও বাড়ছে সংক্রমণ। ইউরোপের দেশগুলোতে লকডাউন দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। ভারতেও আক্রান্তের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। এখনই সতর্ক না হলে, আর স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি না মানলে আগামী কয়েকদিনে মৃত্যু হার বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।