সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অবহিত করার মাধ্যমে জগণের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে “এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ” শিরোনামে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম চলছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের গণযোগাযোগ অধিদপ্তর একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এ কাজ বাস্তবায়ন করছে। এলইভি ভ্রাম্যমান ভ্যানের মাধ্যমে প্রামান্যচিত্র ও নাটিকা আকারে গ্রামে গঞ্জে এ প্রকল্পের আওতায় চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে।
প্রামান্য অনুষ্ঠানে, পদ্মা সেতু ও রেলসংযোগ, ভাঙ্গা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা সমুদ্র বন্দর, বঙ্গবন্ধু শিল্পপার্ক, ইকোনোমিক জোন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, ঢাকার মেট্রোরেল বঙ্গবন্ধ টানেল ঢাকা- কক্সবাজার রেলসংযোগ, হাতিরঝিল প্রকল্প ইত্যাদির উপর নির্মিত প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। সরকারের এসব মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন সূচিত হবে প্রামান্য চিত্রে তা তুলে ধরা হয়। এছাড়াও সরকারের ১০ উদ্যোগের উপর নির্মিত প্রামান্য চিত্র ও নাটিকাও অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে জনগণকে সচেতন করতে তথ্যচিত্র, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত তথ্যচিত্র দেখানো হয়।
আজকের অনুষ্ঠানে দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ শরিফুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে দিনাজপুর জেলা আওয়ামীলীগ এর সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযােদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, , যুগা সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান চৌধুরী মাইকেল, সিনিয়র তথ্য অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সোহেল মিয়া, সদর উপজেলা আনসার ও ভিডিপির কর্মকর্তা মোঃ আবু সাঈদ, সাংবাদিক নুর ইসলাম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে প্রচার কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মােহাম্মদ ওমর ফারুক দেওয়ান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম হয়েছিল বলেই বাঙালী একটা দেশ পেয়েছে, একটা পতাকা পেয়েছে। তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাঙালীর চির আরাধ্য স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ হচ্ছে। বিশেষত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের জীবনধারা বদলে যাবে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় আজ পৃথিবী হাতের মুঠোয় এসেছে, ছেলেমেয়েরা ঘরে বসেই লেখাপড়া করছে। করোনাকালে সরকারের শাসনযন্ত্র ডিজিটাল বাংলাদেশের কারণেই সচল ছিল।
এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো
ক) গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে প্রচার কার্যক্রম শক্তিশালীকরনের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর মেঘা প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ ও এর ফলাফল জনগণকে অবহিত করে সরকারকে সহযোগিতা করা,
খ) প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগ যেমন- একটি বাড়ী একটি খামার, আশ্রয়ণ, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি, নারীর ক্ষমতায়ন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ কমিউনিটি ক্লিনিক, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী, বিনিয়েগ
বিকাশ এবং পরিবেশ সুরক্ষা বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান ও আয় বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশ সরকারকে যে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরের প্রক্রিয়া তাতে দেশের সকল মানুষের স¤পৃক্ততার মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করা,
গ) দেশব্যাপী গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে উদ্ধদ্ধকরণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি), ভিশন-২০২১ ও ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনে সরকারকে সহযোগিতা করা।
ঘ) মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে বিশেষ প্রচারনাসহ বাল্যবিবাহ ও সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম প্রতিরোধে বিশেষ। প্রচারনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
ঙ) জলবায়ু পরিবর্তন জনিত উদ্ভূত সমস্যা মোকাবেলা ও পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়ানোর লক্ষ্যে। জনগণকে তথ্য প্রদান ও সচেতন করা। মৌলিক স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিশু অধিকার, লিঙ্গ সমতা, নারী অধিকার ও নারীর ক্ষমতায়ন, নারী নির্যাতন ও যৌতুক বিরোধী আইন, নারীর প্রতি সহিংসতা, পরিবার পরিকল্পনা, সেনিটেশন, এইচআইভি/এইডস, এসটিডিসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ বিষয়ে গ্রামীণ জনগোষ্ঠিকে সচেতন করা।
চ) গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মাঝে জঙ্গী তৎপরতা, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণ নারী ও শিশু পাচার। ইত্যাদি প্রতিরোধে প্রচলিত আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে সরকারকে রাষ্ট্র পরিচালনায় সহায়তা করা।
গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে প্রচার কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে আনসার ও ভিডিপি কো-অপারেটিভ সোসাইটি (আভিকো) লিঃ মাধ্যমে দেশব্যাপী ১৯ হাজার স্পটে প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। এ ছাড়া জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে ১৯ হাজার ৮৪৪ স্থানে চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। গ্রামীণ নারী সমাজকে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রকল্পের আওতায় ১৩৯০টি মহিলা সমাবেশ করা হয়। ভাসমান জনগোষ্ঠীকে সচেতন করতে ৮ হাজার ৫২টি পথ সঙ্গীত অনুষ্ঠান করা হয়। ৪ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৭ কোটি টাকা।